স্টাফ রিপোর্টার : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা তৈরি করেছে ভারত। কেননা চীনের সাথে বাংলাদেশের একটা চুক্তি হয়েছিল। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে বেইজিংয়ের সাথে দূরত্ব অনেক কমে যেত। আমরা চুক্তি করেও শেষ মুহূর্তে ভারতের কারণে পিছিয়ে এসেছি। আমাদের এত ভারতপ্রীতি কেন? ভারতের সাথে কীসের বন্ধুত্ব? তাকে আর কত দেব?’

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল মিলনায়তনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ অন্যদের গ্রেফতার, হয়রানি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে মামলা ও সমসাময়িক বিষয় ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যখন প্রথম এসেছিল তখন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের স্ত্রী এসেছিলেন। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সব মুসলমান রাষ্ট্র এসেছিল। তখন আমরা বলেছি ‘বাই লিটারেলি’ (আক্ষরিক অর্থে) করবো। ব্রাহ্মণ আর নমসুদ্রের মধ্যে ‘বাই লিটারেল’ হয় না। ভারত হচ্ছে একটা ব্রাহ্মণ নবাব, তারা অন্য কাউকে মানতে নারাজ। তারা মানতে পারে না যে, অন্য কেউ তাদের সমকক্ষ।’

তিনি আরও বলেন, তাদের আমরা ‘বাই লিটারেলে’র কথা বলে রোহিঙ্গারা আজকে আমাদের ঘাড়ে এসে পৌঁছেছে। আজকে আবার কী ভুল করছি, তাদের ভাসানচরে দিচ্ছি…। এদের রিলোকেট (স্থানান্তরিত) করতে হলে সিলেটে আসাম বর্ডারে বসাতে হবে।

নুরুল হক নুরের বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমি খুব বেদনায় আছি যে, আমাদের ভিপি নুর, সে যদি অন্যায় করে থাকে তাহলে তার বিচার হবে। তাই বলে হয়রানি করা যাবে না। তাকে আপনি বের হতে দেবেন না, এটা হয় না। জনগণকে বের হতে দিচ্ছেন না এজন্য দেশে নৈরাজ্য চলছে।’

প্রবাসীদের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের ঠাট-বাট, স্যুট-প্যান্ট, কোট… প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ দিয়েই আমরা চলমান আছি। আজকে তাদের যে ভোগান্তি… করোনার আসার সময়ও বলেছি আমাদের এক কোটি শ্রমিক ভাই বিদেশে আছেন। সরকারকেই তাদের চাকরি নিশ্চিত করতে বলেছি। এতদিন তারা আমাদের টাকা পাঠিয়েছে, এখন সরকারের উচিত কয়েক কোটি ডলার তাদের পাঠানো। ওসব দেশের সাথে সরকারকে সমঝোতা করতে হবে।’

গণস্বাস্থ্যের কীটের গবেষণা স্থগিত হয়ে গেছে কি-না জানতে চাইলে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘স্থগিত হয়ে যায়নি, তবে শ্লথ হয়ে গেছে। এ গবেষণাটা যদি জনসাধারণের কাছে না পৌঁছাতে পারি তাহলে কার জন্য এটা? আমার তো পেপারে নাম ছাপিয়ে লাভ নেই! আমাদের দরকার হলো, যেন জনগণের স্বার্থটা রক্ষা করতে পারি। সরকার অনুমোদন দিলে আমরা প্রত্যেকটা কীট বের করে ফেলতাম। ইভেন করেছি, শুধু বাজারজাত করাটা বাকি ছিল।’

তিনি বলেন, ‘হয়রানি কাকে বলে... ড. বিজন কুমার শীলকে ওখানে (সিঙ্গাপুরে) গিয়ে দরখাস্ত করতে হবে। আজকে ভারতীয় পাঁচ লাখ লোক বাংলাদেশে কাজ করে। ড. বিজন বাংলাদেশের লোক হয়েও কাজ করতে পারবে না। তার ওয়ার্ক পারমিটের জন্য সিঙ্গাপুরে গিয়ে দরখাস্ত করতে হবে। এটার নাম হচ্ছে হয়রানি। দেবে না যে তা নয়। এখন তাকে পয়সা খরচ করতে হবে। তিনি চাকরি-বাকরি ছেড়ে দিয়ে এসেছিলেন। এ খরচটা কে দেবে?’

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘সরকার কেন আমাদের এত হয়রানি করছে? আমরা একটি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট। আমার সরকারের একটা রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে, ল্যাবরেটরির একটা রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে, এক্স-রে ডিপার্টমেন্টের নিতে হবে, ডেন্টালের নিতে হবে। বছরে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে আমাদের। তারপরও রেজিস্ট্রেশন হয় না।’

তিনি বলেন, ‘এখন এ আমলাতান্ত্রিকতার অবসান না হলে দেশের পাবলিককে শুধু হয়রানি করা হবে। আমাদের কীটে অনুমোদন না দেয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে, আমরা কোনো জায়গায় টাকা দিইনি।’

(ওএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২০)