বাগেরহাট প্রতিনিধি : বিশ বছর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ঢাকা-রায়েন্দা রুটের লঞ্চ চলাচল পুনরায় চালুর দাবি উঠেছে। উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলাবাসীর নিরাপদ ও সহজ যাতায়াতের এই মাধ্যমটি দ্রুত চালুর দাবিতে শুক্রবার মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শরণখোলা উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। পাশাপাশি বলেশ্বর নদী রায়েন্দা-বড় মাছুয়া ফেরি পারাপারেরও দাবি জানানো হয়।  

শরণখোলা প্রেসক্লাবের সামনে সকাল সাড়ে ১১টায় সিপিবির ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ কর্মকসূচীতে সিপিবির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনের প্রতিনিধিরাও অংশ্রগ্রহন করেন। মানববন্ধন শেষে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বাস্তবায়নের দাবি তুলে বক্তৃতা করেন সিপিবির উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক রতন দাস, সিপিবি নেতা নির্মল দাস, ইউসুফ খান, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ তালুকদার, যুবনেতা সঞ্জয় কুলু, মৎস্যজীবি সমিতির সাধারণ সম্পাদ সোলায়মান ফরাজী প্রমূখ।

বক্তরা বলেন, একসময় রায়েন্দা ঘাট থকে মর্ডান সান, পুবালী, পুরবী, খেয়াপার, নাবিক, পিংকি, মাছরাঙ্গাসহ সাত-আটটি বিলাসবহুল দুইতলা বিশিষ্ট লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতো। এছাড়া, জেলা সদর বাগেরহাট এবং মোংলা হয়ে খুলনা রুটে চলাচল করতো তালিম, ফ্লাইং হক, শরীফ, সৈকত, নাজিনা, যুগ্নুসহ আরো বেশ কয়েকটি একতলা বিশিষ্ট লঞ্চ। তখন রায়েন্দা বন্দর ও এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ীক পণ্য এই লঞ্চের মাধ্যমেই আনানেওয়া করা হতো। কিন্তু লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগ পড়েছে।

অথচ, শরণখোলা পর্যন্ত রুট পারমিট থাকার পরও লঞ্চগুলো পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার তুষখালী ঘাট পর্যন্ত এসে থেমে যায়। তুষখালী থেকে মাত্র একঘন্টার পথ পাড়ি দিলেই রায়েন্দা লঞ্চঘাট। কোন অদৃশ্য কারণে দীর্ঘ ২০বছর ধরে শরণখোলাবাসী এই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা কারোরই জানা নেই।

এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় তিন বছর আগে বিআইডব্লিউটিএর মাধ্যমে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন ঘাট নির্মাণ করা হয়। এর পর একটি আধুনিক পন্টুও স্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু লঞ্চ আসে আসে করে আর আসেনি। একপর্যায়ে কর্তৃপক্ষ মাস ছয়েক আগে রাতের আধারে সেই পন্টুটিও এখান থেকে তুলে নিয়ে যায়। এখন খালি ঘাটটি পড়ে আছে বলেশ্বর নদীরু পারে।

রায়েন্দা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন, শহিদুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, লঞ্চসার্ভিস চালু থাকলে শরণখোলার ব্যবসায়ীদের ঢাকা-খুলনা থেকে ব্যবসায়ীকপণ্য পরিবহন অত্যন্ত সহজতর হতো। তাছাড়া, জনসাধারণও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আরামদায়ক যাতায়াত করতে পারতো। তাই দ্রুত যাতে শলণখোলা পর্যন্ত লঞ্চসেবা চালু হয়, সেব্যাপারে সরকারের কাছে জোর দাবি জানান তারা।

(এসএকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০)