বিশেষ প্রতিনিধি : দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের একের পর এক ঘটনায় জাতি আজ উদ্বিগ্ন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকল বয়সের নারী যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, নারী নিপীড়ন বন্ধে সবোর্চ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করতে হবে রাষ্ট্রকেই।

রবিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিরনায়তনে "সাভারে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে" জাতীয় নারী আন্দোলন আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবী জানান।

তিনি বলেন, ঘরে, বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, ধর্ষণের পর হত্যা, ধর্ষণ চেষ্টা বা যৌন হয়রানি, উত্যক্তকরণ, এসিড আক্রমণ সহ নানাবিধ সহিংসতার শিকার হচ্ছে নারী ও শিশু। দেশের প্রতিটি নারী ও শিশু সহিংসতার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এর মূল কারণ নারীকে মানুষ হিসাবে গণ্য না করার দৃষ্টিভঙ্গী ও আচরণ।

তিনি বলেন, সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা কিসের ইঙ্গিত ? ক্ষমতার দম্ভে মানুষ কতটা নিচে নামতে পারে তারই প্রমান নয় কি ? সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধুকে গণধর্ষনের মাধ্যমে নীতিহিন সমাজের নগ্ন বিপ্রিকাশ ঘটেছে। সমাজে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে চরম নৈতিক অবক্ষয়, আকাশ সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাব, মাদকের বিস্তার, বিচারহীনতা, বিচারপক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতা। ধর্ষণ করলে অপরাধীর কোনো শাস্তি হবে না, এই মনোভাবের কারণে এর সংখ্যা বাড়ছে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ন্যাপ প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারহানা শাহিন গানি বলেন, প্রতিনিয়ত কিশোরী, তরুণী ও স্কুলছাত্রীসহ নারীরা যৌন নিপীড়ন, উত্ত্যক্তকরণের কারণে নৃশংস নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ফলে তারা আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছে এবং বর্বর হত্যার শিকার হচ্ছে। স্কুলছাত্রীকে প্রকাশ্য দিবালোকে রিকশা থেকে টেনেহিচড়ে নামিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা ও এসএমসি কলেজে গৃহবধুকে গণধর্ষণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সেই সাথে সামাজিক অবক্ষয়, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির ফলে তরুণদের মধ্যে এই ধরনের অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি এ ধরণের বর্বর, নৈরাজ্যজনক সহিংসতার ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আশুকার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকার, প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান এবং সেইসাথে সব ধরনের নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে সবাইকে সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

সংগঠনের সমন্বয়কারী শান্তা আক্তারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারহানা শাহীন গানি, বক্তব্য রাখেন এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, সংগঠনের যুগ্ম সমন্বয়কারী মতিয়ারা চৌধুরী, শাহজাহান আক্তার, শিউলী সুলতানা, ফাতেমা আক্তার মনি, রিভা আক্তার, ফাতেমা আক্তার লাকি প্রমুখ।

(এমএস/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০)