খুলনা প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের JU Solidarity এবং সামাজিক সংগঠন Inspire Care & Cultivate Human Aid-ICCHA/ইচ্ছা এর উদ্যোগে ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ রবিবার খুলনা জেলার কয়রার সদর ইউনিয়নে বন্যার্ত ৫৭ টি পরিবারের মাঝে  খাদ্যসামগ্রী  বিতরণ করা হয়েছে।

JU Solidarity : Jahangirnagar University Ex-students’ and their friends’ unity. এর আকবর উদ্দিন আহমেদ মিলন (জাবি-৯ম ব্যাচ) বলেন, 'দু'মাস ধরে ত্রাণ কার্যক্রম চালাতে গিয়ে যে আত্নতুষ্টি পাচ্ছি তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। জাবি সলিডারিটি ও ইচ্ছার চমৎকার সমন্বয় ও যৌথ ব্যবস্থাপনায় সব কাজ নিপুণভাবে হয়েছে ও হচ্ছে। খুলনার দিকেও অনেক হতদরিদ্র বন্যার কারণে কষ্ট পাচ্ছেন। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতি কার্যক্রমে ৫০-৬০ টি পরিবারকে ত্রাণ দিচ্ছি। এতেই যে উনাদের ভাবাবেগ জাবির যে তরুণ মানবতার সৈনিকদের লিখা থেকে জানতে পারি, আবেগে চোখে পানি এসে যায়। এ যাবত ১৫০০ শত এর বেশি পরিবারের জন্য আমরা ভালোবাসার থলে পৌঁছাতে পেরেছি। আর বলাবাহুল্য এই দূরুহ কাজটি যারা করছে জাবিয়ান ব্যাচ ৩৯ থেকে ৪৯ ব্যাচ, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আর সবচেয়ে বেশি কৃতজ্ঞ আমরা তাদের কাছে যারা আমাদের কার্যক্রম দেখে আমাদের কাছে প্রতিনিয়ত আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন। আল্লাহ সবার সহায় হোন।'

জাবির সামাজিক সংগঠন Inspire Care & Cultivate Human AID-ICCHA/ইচ্ছা এর সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান আপেল (ইতিহাস, ৪৫ ব্যাচ) বলেন, 'দেশের এই সংকটকালীন সময় আমাদের জাবির সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন "ইচ্ছা" দেশের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাড়ানোর কার্যক্রম চালু করেছে। ইতিমধ্যে আমরা ২৪টিরও বেশি জায়গায় প্রায় ১৫০০ পরিবারের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি। এখন আপনার, আমার, আমাদের সামান্য আর্থিক সহযোগীতা আমাদের এই কার্যক্রমকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগীতা করবে। নিজেদের সামর্থ্যানুযায়ী সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।'

ইচ্ছার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামিউল রাকিব (ইতিহাস, ৪৭ ব্যাচ) বলেন, 'বাংলাদেশে সম্প্রতি প্রায় ৩০টি জেলার অধিক স্থানে মানুষ বন্যার প্রকোপে পরেছে।সেসব স্থানের মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। আমাদের সামাজিক সংগঠন 'ইচ্ছা' অন্যান্য সামাজিক কার্যক্রমের ন্যায় বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিভিন্ন উৎস থেকে ফান্ড সংগ্রহ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহায়তা করে তাদের মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টা করছি। আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি যাতে আমরা সারা বাংলাদেশের বন্যা কবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারি। আশা করি সবাই সবার নিজ উদ্যোগে নিজ এলাকার বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ালে হয়ত তাদের এই অসহায়ত্ব অনেকটা কমে যাবে।'

খুলনার টিম লিডার ইয়াহিয়া জিসান (ইতিহাস, ৪৬ ব্যাচ) বলেন, 'খুলনার কয়রা উপজেলার কয়রা সদর ইউনিয়নে ৫৭জন অসহায় মানুষকে ত্রাণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। অসংখ্য ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি JU Solidarity এবং ইচ্ছা'কে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য। আশা করি JU solidarity এবং ইচ্ছা'র বন্যার্ত মানুষের জন্য এই কার্যক্রম সারাদেশে অব্যাহত থাকবে। একজন টিম লিডার হিসাবে ত্রাণ পাওয়া কয়রার মানুষের মুখে যে হাসি দেখতে পেয়েছি দিনশেষে তা আমাদের জন্য পরম মনে করি।'

এছাড়াও ত্রাণ বিতরণকালে স্থানীয় উদ্যমী টিমের সদস্য হাফিজুল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, হযরত আলী, আবু হুরাইরা প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।

উল্লেখ্য, জাবির JU Solidarity এবং ইচ্ছা যৌথ আয়োজনে (২৯ জুলাই ২০২০) গাইবান্ধার ফুলছড়ি, ৩০ জুলাই ২০২০ কুড়িগ্রামের উলিপুরে, ৩১ জুলাই ২০২০ সুনামগঞ্জে, ৩ আগস্ট ২০২০ টাঙ্গাইলের কালিহাতি, ৫ আগস্ট ২০২০ কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী, বগুড়ার শারিয়াকান্দি[১ম দফা]], কুড়িগ্রামের ভোগডাঙ্গাতে, ৬ আগস্ট ২০২০ জামালপুরে, ৮ আগস্ট ২০২০ মানিকগঞ্জে, ১০ আগস্ট ২০২০ সিরাজগঞ্জে, ১২ আগস্ট ২০২০ কুড়িগ্রামের চিলমারী, ১৩ আগস্ট ২০২০ ঢাকার দোহারে, ১৪ আগস্ট মাদারীপুরে, ১৬ আগস্ট ২০২০ ফরিদপুর, ১৮ আগস্ট ২০২০ গাইবান্ধার মালিবাড়ি, কামারজানীতে, ২২ আগস্ট ২০২০ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, ২৪ আগস্ট ২০২০ ঢাকার ধামরাই, ২৬ আগস্ট ২০২০ সাতক্ষীরার আশাশুনি [১ম দফা], ২৮ আগস্ট ২০২০ সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাতক্ষীরার শ্যামনগর [২য় দফা] ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ খুলনার কয়রায়, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা [১ম দফা], ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা [২য় দফা], ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে [৩য় দফা], ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাতক্ষীরার শ্যামনগরে [৪র্থ দফা], ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ বগুড়ার শারিয়াকান্দি [২য় দফা] এবং ইচ্ছা গতবছর (২০১৯ সালে) মানিকগঞ্জে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছিল।

(ওএস/পি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০ইং)