রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে প্রতীকী লাশ কাঁদে নিয়ে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্ত অভিমুখে একক পদযাত্রার ১৮তম দিনে ২৮ সেপ্টেম্বর দুপুর দেড় ঘটিকায় রংপুরের কাউনিয়া থেকে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার সোনালী ব্যাংক চত্বরে এসে পৌঁছেন হানিফ বাংলাদেশী। ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামন থেকে একক পদযাত্রা শুরু করেন হানিফ বাংলাদেশী। এরআগে হানিফ বাংলাদেশী রাজারহাট এলাকায় আসলে রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি রাজারহাট তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

হানিফ বাংলাদেশী তাঁর পথসভায় বলেন, বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী ও বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা চাই ভারত প্রতিবেশীর সাথে মানবিক আচরণ করুক। কিন্তু প্রতিনিয়তই ভারতের বিএসএফ নিরীহ বাংলাদেশীদের হত্যা করে চলছে। হতে পারে তারা গরুচোর-চোরাকারবারি,এদের আইনের আওতায় বিচার করা হোক। যখন যে দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তারা দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতে তোষামোদি ছাড়া জনগণের জানমাল ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় কোনো সরকারই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই।

এই সরকারের ১২বছরের শাসন আমলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে প্রায় ৫০০ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। গত ১৯৯৬সাল থেকে ২৫ বছরে ১২৬৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত ৪৮বছরে প্রায় তিন হাজার বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে বিএসএফ। শাসক দলগুলোর দূর্বল ও নতজানু পররাষ্ট্রনীতি এবং ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার হীনস্বার্থে ভারত তোষণনীতির কারণে বিএসএফ ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারছে। অথচ আমরা দেখেছি অপেক্ষাকৃত ছোটদেশ নেপালের একজন নাগরিককে হত্যা করার পর নেপালের জনগণ ও সরকারের তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছিল ভারত।

তিনি আরো বলেন, আমরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই, অবিলম্বে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। বহুমাত্রিক কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে ভারতের সাথে বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিবেশীর সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হবে। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি জেলা আহবায়ক আহবায় জাকির হোসেন, খন্দকার আরিফ, এমএ মন্ডল এটম এবং হানিফ বাংলাদেশীর সফর সঙ্গী আহম্মেদ বাবু। হানিফ বাংলাদেশী নোয়াখালী সদর উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের আব্দুল মান্নানের পুত্র। তিনি এর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিরোধীতা করে পদযাত্রা করেন। তখন থেকে তিনি হানিফ বাংলাদেশী হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন।

(পিএম/এসপি/সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২০)