রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : কখনো মানবাধিকার কর্মী, কখনো পুলিশের সোর্স, কখনো ভূমিহীন নেতা আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও অন্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিকার চেয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কাশেমপুরের সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রি , আইজিপিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।

গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো অভিযোগপত্রে কাশেমপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে আলাউদ্দিন, একই গ্রামের মফিজউদ্দিনের ছেলে ইয়াছিন আলী, মঞ্জুর হোসেনের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুস সবুরের ছেলে মারুফ হোসেন,মোহাম্মদ আলীর ছেলে আব্দুল গফুরসহ কয়েকজন উল্লেখ করেছেন যে, কাশেমপুরের ছিদ্দিক আলীর ছেলে সেলিম হোসেন বাবুলিয়া জেসি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির কয়েকদিন পর পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে নিজেকে সাতক্ষীরা পুলিশ লাইন ও সরকারি কলেজে পড়াশুনা করেছেন এমন মিথ্যা পরিচয়ে জজ কোর্টের সামনে দারুস সালাম ঋণদান সমিতিতে মাঠ কর্মী হিসেবে কাজ নিয়ে আদায়কৃত কিস্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ চাকুরিচ্যুত হন। এরপর তিনি যশোন নওয়াপাড়ার একটি কাগজের সাংবাদিক পরিচয়ে কদমতলা, লাবসা, বৈকারী, শিবপুর ও বাঁশদহা ইউনিয়নে ব্যাপক চাঁদাবাজি শুরু করেন। সদর উপজেলার এক আওয়ামী লীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে পুলিশের সোর্স পরিচয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করেছেন।

বেকার জীবনে চোরাই মোটর সাইকেল কিনে তাতে সাংবাদিক স্টিকার লাগিয়ে ইটভাটা, ক্লিনিক, গরু ব্যবসায়ি, চোরাকারবারি, পোল্ট্রি ব্যবসায়ি, মাদক ব্যবসায়িসহ বিভিন্ন লোকজনের কাছে চাঁদা আদায় করে আসছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে কৌশলে তাদের ছবি তুলে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপিয়ে জিম্মি করে ফেলেন। ২০১৫ সালে তারই আত্মীয় কামরুজ্জামানের জমি ছেড়ে দিতে না চাইলে সদর থানার উপপরিদর্শক হেকমত আলী তাকে গোলঘরে চড় মেরে মাটিতে ফেলে দেন। নিউজ অব সাতক্ষীরা ডটকমে সাংবাদিকের কার্ড দেওয়ার নাম করে সেলিম সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করেছেন।

চাঁদা না দিলে জমিতে বাড়ি করতে বাধা দেওয়ায় কাশেমপুরের ইয়াছিন আলী সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলন করেছেন। বাধ্য হয়ে আদালতে মামলাও করেছেন। কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মেম্বর পদে দাঁড়িয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হলেও নিজেকে মেম্বর বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে থানায় কয়েকটি জিডি। এরপরও থেমে নেই সেলিম। ভূমিহীন নেতা সেজে অন্য নেতাকে দিয়ে সেলিম তার প্রতিপক্ষদের বিরিুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে ফয়দা লুটে থাকেন। তার অনিয়ম ও দূর্ণীতির কথা জানতে পেরে সেলিম ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকা থেকে বাদ পড়েছেন।

জানতে চাইলে সেলিম হোসেন বলেন, তিনি মানুষের কল্যানে কাজ করে যাচ্ছেন। একটি মহল তার সম্মান নষ্ট করতে উঠে পড়ে লেগেছে।

(আরকে/এসপি/সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২০)