কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ রফিকুল আলমকে অনিয়মতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারিতা, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অবৈধ ভাবে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে। চাকুরীর মেয়াদ বর্ধিত করার ২২ দিনের মাথায় কোন কারণ ছাড়াই কেন যোগ্য এবং দক্ষ এই অধ্যক্ষকে চাকুরীচ্যুত করা হয়েছে সে প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
এ ঘটনায় কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশির ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে রফিকুল আলমকে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে।

কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ দৌলতপুর কলেজ ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে রফিকুল আলম কলেজের দায়িত্বভার গ্রহন করেন। এরপর দীর্ঘ ৩০ বছর অত্যান্ত সুনামের সহিত দায়িত্বপালন করে কলেজটিকে সুদৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠা করেন। গত ৩ জুলাই ২০১৪ ছিল তাঁর কলেজে শেষ কার্যদিবস। এর পূর্বেই গত ১০ মে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সকল সদস্যে বৈঠকে মিলিত হয়। সর্বসম্মত ভাবে সভায় সিদ্ধান্ত হয়, অধ্যক্ষ রফিকুল আলমই আগামী ১ বছর অধ্যক্ষের পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সে অনুযায়ী গত ৪ জুলাই থেকে ৩০ শে জুন ২০১৫ পর্যন্ত সময় কাল তার চাকুরীর মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। এরপরই চক্রান্ত শুরু করে কলেজের ভূগোল বিষয়ের প্রর্দশক জহুরুল আলম ও উপাধ্যাক্ষ আমানুল হক। ওই দিনই অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করে জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে যায় রেজুলেশন বই। তালা মেরে দেওয়া হয় অধ্যক্ষর রুমে। পরে দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রেজুলেশন বই উদ্ধার করে এবং তালা খুলে দেয়। কলেজের কয়েক জন শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, কলেজের উপাধ্যাক্ষ আমানুল হক অধ্যক্ষ’র পদ বাগিয়ে নেওয়ার জন্য কলেজ পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলীকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করেন।
পরিকল্পনা করে অধ্যক্ষ রফিকুল আলমকে সরিয়ে দেওয়ার। এরপরই অত্যান্ত সংগোপনে গত ২৫ জুলাই (শুক্রবার সরকারি ছুটির দিনে) গুটি কয়েক সদস্যের উপস্থিতিতে রুদ্ধদার বৈঠকের মাধ্যমে অধ্যক্ষ রফিকুল আলম’র চাকুরীর মেয়াদ বর্ধিত করন বাতিল করে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয় উপাধ্যাক্ষ আমানুল হককে। হঠকারি এমন এক সিদ্ধান্তে হতভম্ব হয়ে যায় কলেজের শিক্ষিক শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীরা। তাদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশির ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তারা অবিলম্বে রফিকুল আলমকে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল রাখার দাবি জানিয়েছে। ভুক্তভুগীরা অভিযোগ করে বলেছেন, রফিকুল আলম ৩০ বছরের সফল অধ্যক্ষ। চকুরীর মেয়াদ শেষ হলেও কলেজ পরিচালনা পর্ষদ তার মেয়াদ ১ বছর বৃদ্ধি করে। দ্বিতীয় মেয়াদে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান ও করেন তিনি। তবে কেন কোন কারন ছাড়াই ২২ দিনের মাথায় তাকে চাকুরী থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। তবে কি মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে তাকে সরিয়ে নতুন একজন কে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে?
এ বিষয়ে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ’র সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনছার আলী’র কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাওয়া হলে তিনি রফিকুল আলমকে কেন চাকুরী থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো তার সদুত্তর দিতে পারেন নি। পাশাপাশি উৎকোচ গ্রহনের কথাও অস্বীকার করে তিনি নিজেকে একজন সৎ মানুষ হিসেবে দাবি করেন।
(কেকে/এএস/আগস্ট ১৭, ২০১৪)