প্রবাস ডেস্ক : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানব বন্ধন করেছে নিউ ইয়র্কে প্রবাসী বৃহত্তর নোয়াখালীবাসী। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা ব্রুকলিন চার্চমেকডোনাল্ডে বৃহত্তর নোয়াখালীর শত শত প্রবাসী উক্ত মানব বন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও নির্যাতন ঘটনার জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

বক্তারা বলেন, বেগমগঞ্জের একলাশপুরে অসহায় নারীর উপর বর্বরোচিত নির্যাতন বৃহত্তর নোয়াখালীকে কলঙ্কিত করেছে। ধর্ষকের কোন দল নেই। ধর্ষকের পরিচয় শুধু ধর্ষক। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড আইন করতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবি জানান।

ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ ও মানব বন্ধনে বক্তব্য রাখেন এডভোকেট মোহাম্মদ আবুল বাশার, শাহজাহান সাজু, রহমত উল্লাহ, মোঃ বাবলু, সালাহ উদ্দিন রুবেল, মেহেদী হাসান, আরমান হোসেন, শাহাদাত হোসেন আপন, রাইমুল ইসলাম প্রিন্স, নাজমুল আলম নাঈম, মুনীর হোসে সৌরভ, নুরুল ইসলাম, শহীদ হোসেন, শফিকুল হায়দার সম্রাট, মোঃ আলী হাসান ও মাহমুদুল হাসান।

উল্লেখ্য, বেগমগঞ্জে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মধ্যযুগীয় কায়দায় স্বামীকে বেঁধে রেখে গৃহবধূকে নিজ ঘরে বিবস্ত্র করে নির্যাতন স্থানীয় একদল যুবক। ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা। গত ২ সেপ্টেম্বর উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার (৪ অক্টোবর) বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এদিন সকাল থেকে ভিডিওটি ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত রহিম নামে এক যুবককে আটক করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর তিনেক আগে ভুক্তভোগী গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। মাদক ব্যবসায়ী স্থানীয় দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার নেতৃত্বে এলাকার, রহিম, বাদল, কালাম ও তাদের সহযোগীরা স্বামীসহ ওই গৃহবধূকে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

রবিবার সকাল থেকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেই ধিক্কার জানিয়ে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।

রবিবার রাত ১ টায় নির্যাতিতা বাদী হয়ে বাদলকে প্রধান আসামি করে ৯ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইন এবং পর্ণগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করে। এই মামলায় গ্রেফতারকৃত অপর ২ আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। নির্যাতনের ঘটনার প্রধান আসামি বাদলকে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। সোমবার (৫ অক্টোবর) রাতে তাকে বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে রবিবার রাতে বাদলকে র‌্যাব ঢাকার কামরাঙ্গীচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত বাদলকে আজ মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে জানা গেছে।

(বিপি/এসপি/অক্টোবর ০৬, ২০২০)