হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কাগাপাশা ইউনিয়নের হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামটির নাম মাকালকান্দি। ১৯৭১ সালের ১৮ আগস্ট মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের এই দিনে গ্রামের ৭৮ জন নিরপরাধ হিন্দুকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে পাকহানাদার বাহিনী।

ঘাতকরা এতেই ক্ষ্যান্ত হয়নি। বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের পর নারীদের সম্ভ্রমহানী ঘটায়। পরে গ্রামবাসীর মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সেই ভয়াল দিনের স্মৃৃতি বুকে নিয়ে আজও নীরবে-নিভৃতে চোখের অশ্রু ফেলছেন স্বজনরা।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলেও মাকালকান্দির ৭৮ জন আত্মদানকারী স্বজনদের আজ পর্যন্ত পুনর্বাসনের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। স্বজনহারা নারী-পুরুষের আর্তনাদে গ্রামে এখনও বেদনার সুর বাজছে। ৭১’র ঘাতকরা চিরদিনের জন্য তাদের সুখ কেড়ে নিয়েছে। গ্রামবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বর্তমান সরকারের কাছে ৭৮ জন আত্মদানকারী স্বজনদের পুনর্বাসনসহ যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারের জোর দাবি জানিয়েছেন।
গণহত্যার সময় গুলিতে আহত চংস মোহন দাস বলেন, মাকালকান্দি এলাকাটি প্রত্যন্ত এলাকায় হলেও লুট ও হয়রানীর জন্য গণহত্যা চালানো হয়। এই দিনটির কথা আজও ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী। অতীতে কেউ আমাদের খোঁজ না নিলেও বর্তমানে দিবসটি উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আসছেন। তিনি এই গণহত্যার ঘটনার বিচারের দাবি জানান।
বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ইকবাল খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে মাকালকান্দিবাসী যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তা অপুরণীয়। বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা এ ধরণের ক্ষতির শিকার হয়েছেন তাদেরকে মুল্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। মাকালকান্দির ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
(পিডিএস/এএস/আগস্ট ১৭, ২০১৪)