স্টাফ রিপোর্টার : দরপতনের মধ্যদিয়ে আরও একটি সপ্তাহ পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে হাজার কোটি টাকার ওপরে হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এর মধ্যমে টানা দুই সপ্তাহের পতনে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে এ অর্থ হারিয়েছেন তারা।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯৮ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ৯৯ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে এক হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে তিন হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এ হিসেবে টানা দুই সপ্তাহের পতনে বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৯১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৭৮ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ১২৩ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পতন হলেও গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর অপর দুই সূচকের সামান্য উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক বেড়েছে ৪ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৭ দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ১ দশমিক শূন্য ৮ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৪১ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪২ শতাংশ।

বাজার মূলধন ও প্রধান মূল্য সূচকের পতনের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৬৮টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬২টির। আর ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৭১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯২০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৪৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে তিন হাজার ৩৫৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় চার হাজার ৬০৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ২৪৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৭৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের ১৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ৪ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ অবদান ছিল।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে-এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, ওয়ালটন হাইকেট ইন্ডাস্ট্রিজ, বেক্সিমকো, ব্র্যাক ব্যাংক, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, সন্ধানী লাইফ এবং রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ১৬, ২০২০)