সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : বাউলি শিল্পী ইসলাম উদ্দিন। গ্রামের বাড়ী নেত্রকোণা কেন্দুয়া উপজেলার  সান্দিকোণা ইউনিয়নের খিদিরপুর গ্রামে। ২০১৮ সালে স্ট্রোক করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসা দেওয়ার পর ফিরে আসেন বাড়ীতে। অর্থের জন্য তার চিকিৎসা হচ্ছিল না। চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে বসেই প্যারালাইসিসে ভুগছিলেন। তার চোখে মুখে ছিল হতাশা আর হতাশা। প্রায়ই মনের দুঃখে মুখ ভরে বলতেন কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ স্যার থাকলে আমাকে সহজে মরতে দিতেন না। টাকার জন্য চিকিৎসার অভাব হতো না। কিন্তু এখন কে দেবেন আমার চিকিৎসার অর্থ? আর কে চালাবেন আমার সংসার। এসব কথা মিডিয়াতে প্রচার হলে সহযোগিতার হাত বাড়ান নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী  আবদুর রহমান। 

শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসক এই গুণী শিল্পীর বাড়ীতে এ্যাম্বুলেন্স পাঠান। পরে তিনি নিজে গিয়ে নেত্রকেনা আধুনিক সদর হাসপাতালে এই শিল্পীকে ভর্তি করান। সেখানে তিনি সিভিল সার্জনসহ চিকিৎসকদের বলেন তার চিকিৎসার সকল প্রকার ব্যয়ভার জেলা প্রশাসন বহন করবে। তাছাড়া এসময় বাউল শিল্পী ইসলাম উদ্দিনের কন্যার লেখাপড়া ও সংসার পরিচালনার জন্য নগদ কিছু অর্থও তুলে দেন তার কন্যার হাতে।

জেলা প্রশাসক কাজী আবদুর রহমান আরও বলেন এই শিল্পীর পরিবারের নিরাপদ বসবাসের জন্য একটি ঘরও তৈরি করে দেয়া হবে। জেলা প্রশাসনের এরকম উদ্যোগের জন্য শিল্প সহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনের সকলেই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এব্যপারে জানতে চাইলে নেত্রকোনার সিভিল সার্জন ডাঃ তাজুল ইসলাম বলেন বাউল শিল্পী ইসলাম উদ্দিনের চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসক উদ্দ্যোগ নিয়ে নেত্রকোণার আধুনিক সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করান।

সরকারি খরচেই তার চিকিৎসা হবে। তবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা না হওয়ায় শরীরের যেসব অঙ্গ ডেমেজ হয়েগেছে তা সারিয়ে তোলা খুব কষ্ট হবে। তিনি সব চিকিৎসকদের নিয়ে ইসলাম উদ্দিনের চিকিৎসার জন্য আন্তরিক ভাবেই চিকিৎসা সেবা দেবেন বলে জানান। বাউল শিল্পী ইসলাম উদ্দিনের গানেই মুগ্ধ হয়েছিলেন নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ।

তিনি তার ১০টি নাটক, ২টি চলচিত্র (ঘেটুপুত্র কমলা ও নয় নম্বর বিপদ সংকেত) এবং ৩টি বিজ্ঞাপন চিত্র কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। গুণী এই শিল্পী তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সকলের দৃষ্টিও কেড়ে ছিলেন।

(এসবি/এসপি/অক্টোবর ১৭, ২০২০)