সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : সংঘবদ্ধ একটি লাঠিয়াল বাহিনীর চার দফা হামলার ঘটনায়  সাত মাস ধরে ভিটে ছাড়া  পেচুন্দুরী গ্রামের ৯টি পরিবার। প্রাণের ভয়ে ওই গ্রামের মুনিরুজ্জামান মজনু, বাচ্চু, ফজলু, বদরুল, নজরুল, আব্দুল হামিদ, রতন, আরজু ও  সুফিয়া আক্তারের পরিবারের সদস্যরা নিজেদের বসত ভিটা ছেড়ে আশে পাশে বিভিন্ন গ্রামের আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে দুঃখে কষ্টে বসবাস করছেন। 

এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের পেচুন্দুরী গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে শফিকুল ইসলাম ময়না ও আব্দুর রহমান মুন্সীর ছেলে মনিরুজ্জামান মজুদের মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জের ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাত মাসে বসত বাড়িতে চার দফায় লাঠিয়াল বাহিনী হামলা ভাংচুর ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটে।

মনিরুজ্জামান মজনু অভিযোগ করে বলেন গত মার্চ, এপ্রিল, জুলাই ও সাত অক্টোবর তাদের নয়টি পরিবারের বসত বাড়িতে চার দফায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুঠপাট করে শফিকুল ইসলাম ময়না বাহিনীর সদস্যরা। তিনি বলেন এলাকায় তারা সংঘবদ্ধ একটি লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে পরিচিত। আমরা নিরীহ ও নির্যাতিত, তাই তাদের হামলা ভাংচুর ও লুঠপাটের ঘটনায় আইনের আশ্রয়ে গিয়ে কেন্দুয়া থানায় পৃথক চারটি মামলা দায়ের করেছি।

গত ৬ অক্টোবর একটি মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে শফিকুল ইসলাম ময়নার গ্রুপের দুই আসামীকে বিচারক জেল হাজতে পাঠানোর নিদেশ দেন। এতে ময়না বাহিনীর সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পর দিন আমাদের বসত বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুঠপাট করে। ওই দিন ৯০ বছরের বৃদ্ধ আমার বাবা আব্দুর রহমান মুন্সী, শিউলী আক্তার, সাথী আক্তার, নজরুল, বদরুল সহ পাচ জন গুরুতর আহত হয়ে কিশোগঞ্জ সদর হাতপাতালে চিকিৎসা নেন।

এ ঘটনায় মনিরুজ্জামান মজনু বাদী হয়ে শফিকুল ইসলাম ময়না সহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মজনু জানান মামলা দায়েরের পর সব আসামী এখনো অধরা। তিনি বলেন উল্টো তাদেরকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে আসামীরা।

এ ব্যাপারে শফিকুল ইসলাম ময়নার সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মনিরুজ্জামান মজনুদের বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুঠপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মনিরুজ্জামান মজনু গংরা মামলাবাজ। তারা নিজেরাই নিজেদের বাড়ীঘরে হামলা ভাংচুর ও লুঠপাট চালিয়ে আমারেদ বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। পেমই তদন্ত কেন্দ্রের ইনর্চাজ এস আই সুজন তালুকদার বলেন এ সব ঘটনায় পৃথক পৃথক মামলা হলেও তিনটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একটি মামলা তদন্ত চলছে। ওই মামলা আসামীরা পুলিশী গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে।

(এসবি/পিএস/১৮ অক্টোবর, ২০২০)