স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনার পর ফাঁড়ির ইনচার্জ (বরখাস্ত) এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার হদিস পাচ্ছে না পুলিশ। তাকে পালাতে কেউ সহযোগিতা করেছে কি-না, তা জানতে তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ সদরদফতর।

সোমবার রাতে এ কমিটি করা হয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, পুলিশের একজন সহকারী মহাপরিদর্শকের (এআইজি) নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি শুধু তদন্ত করবে যে অভিযুক্তকে (এসআই আকবর হোসেন) কেউ পালাতে সহযোগিতা করেছে কি-না।

গত ১০ অক্টোবর বিকেলে রায়হানকে আটক করে বন্দরবাজার থানা পুলিশ। ওই দিন রাতে ফাঁড়িতে তার ওপর নির্যাতন চালায় পুলিশ এবং তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করে। ভোরে অপরিচিত একটি মোবাইল থেকে ছেলের ফোন পায় তার পরিবার। তাতে ফাঁড়ি থেকে তাকে ছেড়ে দিতে টাকা দাবি করা হচ্ছে বলে জানান রায়হান।

পরিবারের কাইকে টাকা নিয়ে এসে তাকে উদ্ধারের অনুরোধও করেন রায়হান। ভোরে তারা টাকা নিয়ে ওই ফাঁড়িতে গেলে জানানো হয় রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে, সকাল ১০টার দিকে আসতে হবে।

পরে সকাল ১০টার দিকে গেলে তাকে বলা হয় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে মারা গেছেন। এরপর মৃত ছেলের শরীরে নির্যাতনের ভয়াবহ চিহ্ন দেখতে পান তিনি। রায়হানের হাতের নখগুলো উপড়ানো ছিল।

পুলিশ দাবি করে, রায়হানকে ছিনতাইকারী সন্দেহ করে জনতা গণপিটুনি দেয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। তবে সিটি করপোরেশনের ফুটেজে এর কোনো প্রমাণ মেলেনি।

পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক করবস্থানে দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলার পর এর তদন্তভার দেয়া হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

(ওএস/এসপি/অক্টোবর ১৯, ২০২০)