ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুর রাজনীতিতে শুদ্ধি অভিযানের সুবাতাস বইলেও কারাগারে বসেই ঠিকাদারী থেকে নানা কিছু নিয়ন্ত্রণ করছে আলোচিত মানি লন্ডারিং মামলায় আটক রুবেল-বরকত-বিল্লাল সিন্ডিকেট। তাদের সংঘবদ্ধ চক্রের থাবা থেকে এখন পর্যন্ত মুক্ত হতে পারেনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর। তাদের হাতে গড়া ভাব শিষ্যরাই ফরিদপুরের ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করছে।

চলতি মাসে ফরিদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগসহ কয়েকটি দপ্তরের কোটি, কোটি টাকার ঠিকাদারী কাজ এই গ্রুপের সদস্যরাই পেয়েছে। মঙ্গলবার ফরিদপুর বিএডিসি (সেচ)-এর ১১১ গ্রুপ কাজের দরপত্র জমা দেবার শেষ দিন ছিল। প্রায় ১৯ কোটি টাকার ইউপিভিসি পাইপ ক্রয়ের লক্ষ্যে দরপত্র আহবান করা হয়। কিন্তু নানা নিয়মনীতির ফর্দ আর উল্লেখিত সিন্ডিকেটের সাথে শলাপরামর্শের মাধ্যমে এই দরপত্র আহবান করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে এই প্রকল্পের পরিচালক মনিরুল ইসলাম বিশেষ সুবিধা নেবার মাধ্যমে এই কাজ বন্টন করেছেন। অসংখ্য ঠিকাদার ইচ্ছো থাকলেও কাজে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। প্রায় ২৯জন ঠিকাদার গত ১২ই অক্টোবর কৃষি মন্ত্রীর কাছে নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ দেন। বিগত দিনে এই বিএডিসি উল্লেখিত চক্র এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে। শত শত কোটি টাকার ঠিকাদারী কাজ করে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে।

৭ বছরে অফিসের ধারের কাছে যেতে পারেননি বলে এক ঠিকাদার বলেন, অফিসের সীমানায় দেখলেইতো হাড়-গোর ভেঙ্গে দিতো। অনেকের লাইসেন্স আটকিয়ে রাখা হতো। ভয়ে কেহ মুখ খুলেনি। কেউ কাজও করতে পারেনি। তাই অসংখ্য ভালো ঠিকাদারেরও সিমিলার ওয়ার্ক নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরে শুদ্ধি অভিযান শুরু করার পর আমরা প্রত্যাশিত হয়েছি। ব্যবসা, বাণিজ্য করার স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু মর্মাহত হলাম সেই অশুভ শক্তি যখন অফিস নিয়ন্ত্রণ করছে তখন দুঃখ বলব কার কাছে।

খোজ নিয়ে জানা যায়, রুবেল-বরকত-বিল্লাল এর ব্যবসা বাণিজ্য দেখা শোনার দায়িত্বে থাকা জলিল, সজল, বুলবুল, সমীর, জাহিদগং এবারের প্রায় ১৯ কোটি টাকার কাজ হাতিয়ে নিয়েছে। আর এই কাজ পাইয়ে দেবার নাটের গুরু হিসেবে নেপথ্যে কাজ করেছে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিচালক মনিরুল ইসলাম।

ফরিদপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ঠিকাদার ও আ.লীগ নেতা মনিরুল হাসান মিঠু এই টেন্ডারবাজীর সত্যতা অবগত করে বলেন, বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। বলার কিছু নেই। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মঙ্গলবার দুপুরে কৃষি মন্ত্রী অভিযোগটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেবার নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ হাসপাতালে ভর্তি আছি। যে পদ্ধতিতে দরপত্র হয়েছে সেখানে অনিয়মের সুযোগ নেই।

রুবেল-বরকত-বিল্লাল সিন্ডিকেটের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সঠিক নয়। আমি গত ডিসেম্বরে যোগদান করেছি কারও সাথে সম্পর্ক তৈরি করতে সময় লাগে। আমি তাদেরকে চিনি না।

(ডিসি/এসপি/অক্টোবর ২১, ২০২০)