সৈয়দ নুহু উল আলম নবীন, আমতলী (বরগুনা) : গত দুই দিনের অতিবর্ষনে আমতলী-তালতলী উপজেলার জন-জীবন বিপর্যস্থ হয়ে পরেছে। তলিয়ে গেছে আমন ধানের ক্ষেত, পানের বরজ ও মাছের ঘের। আমতলী পৌর শহরসহ উপজেলার সর্বত্র পানিতে থই থই করছে। পৌর শহরে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় দেখা দিয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। ঘর-বাড়ী পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পরেছে পৌরবাসী।

কলাপাড়া আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানাগেছে, গত ২৪ ঘন্টায় আমতলীতে ১১৮ মিমি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উপকুলের আমতলী-তালতলী উপজেলার অধিকাংশ আমন ধানের ক্ষেত ও পানের বরজ পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরের অধিকাংশ মাছের ঘের ও বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ভিতরের বিভিন্ন এলাকার পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

জলকপাট দিয়ে তেমন পানি নিস্কাশন না হওয়ায় দুই উপজেলায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতায় আমন ধানের তেমন ক্ষতি না হলেও পানের বরজ ও মাছের ঘেরে অনেক ক্ষতি হবে বলে জানান হলদিয়া ইউনিয়নের টেপুড়া গ্রামের পান ও মৎস্য চাষি মোঃ আবু সালেহ। এদিকে আমতলী পৌর শহরে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা ভালো না থাকায় দেখা দিয়েছে চরম জলাবদ্ধতা। এতে ঘর-বাড়ী পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পরেছে পৌরবাসী। দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জলাবদ্ধতায় আমতলী পৌর শহরের বিভিন্ন রোড-ঘাট তলিয়ে গেছে। পৌর শহরের আমতলী মফিজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মফিজ উদ্দিন বালক মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আমতলী সরকারী কলেজ, বকুলনেছা মহিলা ডিগ্রী কলেজ, আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খোন্তাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার সর্বত্র আমন ধানের ক্ষেত, পানের বরজ ও মাছের ঘের তলিয়ে গেছে।

টেপুড়া গ্রামের পান বরজ ও মৎস্য চাষী মোঃ আবু ছালেহ বলেন, অতিবর্ষনে মাছের ঘের ও পানের বরজ তলিয়ে গেছে। ঘের থেকে অনেক মাছ বের হয়ে গেছে। এতে অন্তত দুই লক্ষ টাকার ক্ষতি হবে।

আমতলী পৌরসভার সবুজবাগ এলাকার জাকির হোসেন বলেন, ঘরের মধ্যে পানি থইথই করছে।

আমতলী আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, বৃষ্টির পানিতে আমন ধানের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। জলকপাট দিয়ে তেমন পানি নিস্কাশন না হওয়ায় দেখা দিয়েছে প্রচুর জলাবদ্ধতা।

তালতলী উপজেলার গাবতলী গ্রামের মোঃ ইসহাক হাওলাদার বলেন, পানিতে মাঠ-ঘাট থইথই করছে। আমন ধানের ক্ষেত পানির নিচে রয়েছে।

আমতলী মফিজ উদ্দিন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহ আলম কবির বলেন, বিদ্যালয় মাঠ তলিয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের কোয়াটার তলিয়ে ঘরের মধ্যে পানি প্রবেশ করেছে। ঘরের মধ্যে পানি থইথই করায় ঘাটের উপর অবস্থান করছি। তিনি আরো বলেন, পৌর শহরে চরম জলাবদ্ধতায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পানি নিস্কাশন ব্যবস্থার দাবী জানাই।

আমতলী বন্দর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, পৌর শহরে এতো পানি আমি দীর্ঘ ২০ বছরে দেখি নাই। তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয় মাঠ তলিয়ে গেছে। দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবী জানাই।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, আমন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে সবজির ক্ষেতে কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

(এসএন/এসপি/অক্টোবর ২২, ২০২০)