শিতাংশু গুহ


ওয়াশিংটন পোষ্ট পত্রিকা আজ বুধবার জানাচ্ছে, মিশিগান ও উইসকনসিনে মহিলারা বাইডেনকে সমর্থন করছেন, এরফলে মিশিগানে বাইডেন সামান্য এবং উইসকনসিনে বড় ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পত্রিকাটি বলেছে, এবার রেকর্ড আগাম ভোট হচ্ছে, ডেমক্রেটরা বেশি দিচ্ছেন। তবে ব্যাটেলগ্রাউন্ড ষ্টেটগুলোতে ট্রাম্প-বাইডেন ব্যবধান কমছে। এই পত্রিকার মতে, ১৪টি সিনেট আসন এই নির্বাচনে টলটলায়মান? উল্লেখ্য, সিনেট রিপাবলিকানদের দখলে, ডেমক্রেটরা কি সেটি দখল নিতে পারবে? ‘দি ইউএস সান’ পত্রিকা বলেছে, ট্রাম্প বিশ্বাস করছেন, হাউসের কর্তৃত্ব রিপাবলিকানদের হাতে আসবে, এবং স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি বিদায় নেবেন। 

‘দি ইউএস সান’ জানায়, ট্রাম্প বলেছেন, নির্বাচনের পর তিনি বিশাল স্টিম্যুলাস প্যাকেজ দেবেন, যা ইতিপূর্বে কেউ দেখেনি। পত্রিকাটি আরো বলেছে, বাইডেনের ব্যবসায়িক পার্টনার টনি বুবুলিনস্কি আবারো জোর দিয়ে বলেছেন, রাশিয়া ও চীনের সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়ে বাইডেন শেষ বিতর্কে ডাহা মিথ্যা কথা বলছেন। বাইজেনের ভাই ‘জিম বাইডেন’ অবশ্য এর উত্তর দিয়েছেন। বলা হচ্ছে, বাইডেন চীনের প্রতি নমনীয়, চীনের বিরুদ্ধে ট্যারিফ আরোপের বিরুদ্ধে, চীনের সাথে তাঁর পুত্রের ব্যবসা আছে, কোভিড-১৯’র উৎপত্তিস্থল চীনের প্রতি বাইডেনদের দহররম-মহররম আছে। চীন ইস্যু এবার নির্বাচনে একটি ফ্যাক্টর। ট্রাম্প চীনের বিরুদ্ধে সোচ্চার।

নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সপ্তাহে ডেমক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন অদূর ভবিষ্যতে ট্রাম্প পরবর্তী বাইডেন প্রশাসনের চিত্র তুলে ধরছেন এবং দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার কথা বলছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শানিত আক্রমন হানছেন প্রতিদ্ধন্ধী বাইডেন, ডেমক্রেটিক পার্টি, ডাকযোগে ভোট ও কোভিড-১৯ নিয়ে রাজনীতির বিরুদ্ধে। ফিলাডেলফিয়ায় তিনি বলেছেন, ডেমক্রেটরা শুধু কোভিড, কোভিড, কোভিড করছেন? সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এবং বাইডেনের পক্ষে তীব্র আক্রমন চালাচ্ছেন। ট্রাম্প বলেছেন, ওবামা ২০১৬-তেও হিলারির জন্যে ভোট চেয়ে প্রচারণা করেছিলেন, তাতে কি হয়েছে?

প্রেসিডেন্ট পত্নী ফার্ষ্ট লেডি মেলোনিয়া ট্রাম্প ফিলাডেলফিয়ায় বলেছেন, বাইডেনের সমাজতান্ত্রিক এজেন্ডা আমেরিকাকে ধ্বংস করে দেবে। তিনি তার স্বামীকে আরো চার বছর হোয়াইট হাউসে রাখার আহবান জানিয়ে রিপাবলিকানদের জয়যুক্ত করার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ট্রাম্প কন্যা ইভানকা ট্রাম্প এক টুইটে বলেছেন, জনগণের প্রেসিডেন্টকে ‘ট্রাম্পকে’ পুন্:নির্বাচিত করার লক্ষ্যে আমাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সিএনএন বুধবার বলেছে, জাতীয় পর্যায়ে বাইডেন ১২ পয়েন্টে ট্রাম্প থেকে এগিয়ে (৫৪-৪২) গেছেন, হয়তো এজন্যেই ট্রাম্প সিএনএনকে বলেন, ‘ফেইক নিউজ’। ডেমক্রেটরা বলেছেন, টেক্সাস তাঁরা জিতেছেন। ১৯৭৬-এ ডেমক্রেট জিমি কার্টার টেক্সাস জিতেছিলেন, এরপর আর কখনো জেতেননি।

ফিলাডেলফিয়ায় ছুরি উঁচিয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে এলে গুলিতে এক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হবার পর সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্রমাগত বিক্ষোভ ও অরাজকতা চলছিলো। ট্রাম্প বুধবার বলেছেন, এভাবে চলতে পারেনা। একইদিন তিনি সেখানে ন্যাশনাল গার্ড নিয়োগ করেছেন। হয়তো এখন পরিস্থিতি শান্ত হবে? এবার নির্বাচনে ব্যাপক অশান্তি’র সম্ভবনার কথা বলা হলেও তা ঘটার কোন কারণ নেই? ট্রাম্প জিতলে ৪ঠা নভেম্বর সবকিছু ঠান্ডা হয়ে যাবে, এবং এ কারণে তিনি জিতবেন। বাইডেন জিতলে মানুষ ভাবছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে, যদিও এর কোন ভিত্তি নেই?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।