শিতাংশু গুহ


টাইম ম্যাগাজিন বলেছে, নির্বাচনে যিনিই জিতুক, যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক টানাপোড়ন চলবে। কোরীয় যুদ্ধের ৭০তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে চীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমন করে বলেছেন, ‘কোন ব্ল্যাকমেলিং, ব্লক বা অতিমাত্রায় চাপ-এ কাজ হবেনা। তিনি আরো বলেন, ১৯৫০-৫৩ কোরীয় যুদ্ধ প্রমান করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি অপরাজেয় নয়। টাইম ম্যাগাজিন অন্য এক নিবন্ধে বলেছে, টেক্সাস কি ১৯৭৬’র পর ২০২০-তে ডেমক্রেট জিতবে? ৩৮টি ইলেকটোরাল ভোট নিয়ে টেক্সাস জয় ট্রাম্পের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে জনমত জরিপ ঘনঘন উঠানামা করছে।

ট্রাম্প বলেছেন, আপনার ভোটে জয়ী হয়ে আমরা আমেরিকাকে রক্ষা করবো, আমরা মার্ক্সিষ্ট, সমাজতন্ত্রী, দাঙ্গাবাজ, পতাকা পোড়ানো ও চরম বামপন্থীদের পরাজিত করবো। তিনি আরো বলেন, এবারকার নির্বাচন হচ্ছে, মার্কিন স্বপ্ন এবং সমাজতান্ত্রিক নৈরাজ্যের মধ্যে ভালোটা বেছে নেয়া, আমাদের প্রতিদ্ধন্দী, আমেরিকাকে কমিউনিস্ট কিউবা বা সমাজতান্ত্রিক ভেনিজুয়েলা বানাতে চায়? হাউস স্পীকার ন্যান্সি পেলোসি এক টুইটে বলেছেন, মনে হচ্ছে, জো বাইডেন জিতছেন, আমরা তাঁর সাথে অন্তর্বর্তীকালীন এজেন্ডা নিয়ে তাঁর সাথে আলোচনার তৈরী হচ্ছি। জো বাইডেন বলেছেন, নির্বাচন শুধু পলিসি নয়, দেশের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ভর করছে ব্যালটের ওপর। তিনি বলেন, আমি ও হ্যারিস দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে দিবারাত্র পরিশ্রম করবো।

হোয়াইট হাউস প্রেস সেক্রেটারি কেলীগ ম্যাকেনানি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেত্রীত্বের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছে, ট্রাম্পের নেতৃত্বের কারণে শেষ কোয়ার্টারে মার্কিন অথনীতি ৩৩.১% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা করোনাকালে সর্ববৃহৎ অর্জন। মার্কিন লেবার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, পেনডেমিক সত্বেও বেকারত্ব একটু কমেছে, এটি ট্রাম্পের জন্যে সুখবর, কারণ নির্বাচনের আগে এটি সর্বশেষ পরিসংখ্যান। লেবার ডিপার্টমেন্ট বলেছে, গত সপ্তাহে ৭৫১০০০ মানুষ বেকারভাতার আবেদন করেছেন, যা ধারণার চেয়ে কম! হ্যাকাররা উইসকনসিন রিপাবলিকান পার্টির একাউন্ট থেকে ২.৩মিলিয়ন ডলার চুরি করেছে। ষ্টেট পার্টি প্রধান এপি-কে এ তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পুন্:নির্বাচনের তহবিল থেকে এ অর্থ খোয়া গেছে।

বাইডেন ক্যাম্পেইন মরিয়া ফ্লোরিডা জিততে, তারা জানেন ফ্লোরিডা হাতছাড়া করা যাবেনা। মিনেসোটা হয়তো ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছে! ২০১৬-তে ট্রাম্প অন্তত: ১০টি ষ্টেটে জিতেছেন যেখানে ভোটের ব্যবধান ছিলো মাত্র ২%শতাংশ। এইসব ষ্টেটে ১২৫টি ইলেক্ট্রোরাল ভোট আছে। জয়ের জন্যে দরকার ২৭০টি ভোট। ট্রাম্প আগেরবার জেতা ৬টি টেস্ট যেমন আরিজোনা, ফ্লোরিডা, মিশিগান, পেনসিলভানিয়া, উইসকনসিন, ও নর্থ ক্যারোলিনা পুনরায় জয়ের জন্যে সর্বস্ব পন করে মাঠে নেমেছেন। এসব ষ্টেটে ১০১টি ভোট আছে। একইভাবে বাইডেন ২০১৬-তে হিলারি ক্লিনটন জেতা ৪টি ষ্টেট, মেইন, মিনেসোটা, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও নেভাদা ধরে রাখতে সচেষ্ট, যেখানে ২৪টি ইলেকটোরাল ভোট আছে।

ওহাইও, না জিতে রিপাবলিকানরা কখনো প্রেসিডেন্ট হননি। টেক্সাস নীল ষ্টেট নয়, বাইডেন টেক্সাস জিতলে তা হবে ট্রাম্পের জন্যে ব্লো-আউট। নর্থ ক্যারোলিনার ১৫টি ভোট ট্রাম্পকে জিততেই হবে? উভয় প্রার্থী এ রাজ্যে ব্যাপক খরচ করছেন। নেভাদা লাল থেকে নীল হয়েছে, বারাক ওবামা-বাইডেন জুটি এ কাজটি করেছেন। এবারো কি নীল থাকবে? পেনসিলভানিয়ায় জিতে ট্রাম্প ২০১৬-তে হোয়াইট হাউসে যাবার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ১৯৮৮-তে জর্জ এইচ, ডবলু বুশ জয়ী হবার পর ট্রাম্প প্রথম রিপাবলিকান যিনি পেনসিলভানিয়া জেতেন। উইসকনসিনে হিলারি হেরেছেন এবং ১৯৮৪’র পর ট্রাম্প একমাত্র রিপাবলিকান যিনি সেখানে জয় পেয়েছেন। মিশিগান ডেমক্রেট ফেভারিটি, ২০১৬-তে ট্রাম্প জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন। মিনেসোটা ২০১৬-তে ১.৫% ভোটে হিলারিকে সমর্থন দিয়েছিলো। ব্যবধান সামান্য, ভোট ১০টি? নিউ হ্যাম্পশায়ারের ৪টি ইলেকটোরাল ভোট আছে, ডেমক্রেটরা গত চারটি নির্বাচনে জিতেছেন, এবার কি ট্রাম্প জিতবেন?

লেখক : আমেরিকা প্রবাসী।