সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অবশেষে রবিবার বিকেলে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের দক্ষিণ শ্রীপুরে স্বাধীনতা বিরোধী ও হিন্দু নির্যাতনকারি জাফর সাঁফুই এর নামে উদ্বোধনকৃত সড়কের স্মৃতিফলক থেকে মুছে ফেললেন উপজেলা প্রকৌশলী।

এদিকে পত্রিকায় প্রকাশের কারণে জাফর সাঁফুই এর নাম স্মৃতিফলক থেকে মুছে ফেলার ঘটনায় দৈনিক প্রজন্মের ভাবনার সাতক্ষীরা প্রতিনিধির বিরুদ্ধে সোমবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে মোবাইল ফোনে হাইকোর্টে রিট করার হুমকি দিয়েছেন দক্ষিণ শ্রীপুর ইউপি সদস্য আবু জাফর সাঁফুই।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস সূত্রে জানা গেছে, আইআরআইডিপি প্রকল্পের আওতাধীন দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের শ্রীকলা মকবুলের দোকানের সামনে থেকে দক্ষিণ শ্রীপুর ৭৭৫ মিটার কাচা রাস্তা পাকা করার জন্য এলজিইডি থেকে গত বছরের ১২ জুন ৩৫ লাখ এক হাজার ২৩৯ টাকা বরাদ্দ করা হয়। এজন্য খুব শ্রীঘ্র দরপত্র আহবান করার সদ্ধিান্ত নেওয়া হয়।
কালীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি প্রশান্ত কুমার সরকার ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই স্থানীয় সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম জগলুল হায়দার কালীগঞ্জের কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়ম বহির্ভুতভাবে গত ১৪ আগষ্ট সকালে তড়িঘড়ি করে স্মৃতি ফলক উদ্বোধন করেন। সড়কটি ২০১২ সালের ৩১ মার্চ উপজেলার ফতেপুর গ্রামের শিক্ষক মিতা রানী বালা ও লক্ষীপদ মণ্ডলের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের নেতৃত্বদানকারি ও স্বাধীনতা বিরোধী ইউপি সদস্য জাফর সাঁফুই এর নামে নামকরণ করা হয়। রাস্তাটি দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন বোর্ডের আওতায় হলেও সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়নি। জীবিত অবস্থায় একজনের নামে নামকরণের ব্যাপারে ডাকা হয়নি কোন সভা। বিষয়টি স্থানীয় পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। গত ১৭ আগষ্ট দুপুর ১২টায় সাতক্ষীরা মায়ের বাড়িতে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আলোচনা সভায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ করেন। বিষয়টি সভায় উপস্থিত জেলা প্রশাসক মো. নাজমুল আহাসন ও পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীরের নজরে আসে।। একপর্যায়ে গত রোববার বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা পকৌশলীর পক্ষ থেকে বিতর্কিত নামটি কালো কালি দিয়ে মুছে ফেলা হয়।
এদিকে জাফর সাঁফুই নিজেকে স্বাধীনতা বিরোধী ও হিন্দু নির্যাতনকারি হিসেবে মানতে অস্বীকার করলেও হিন্দু নির্যাতনের মামলায় এজাহার ও অভিযোগপত্রভুক্ত আসামী বলে স্বীকার করেন।
সাংসদ জগলুল হায়দার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ওয়াহেদুজ্জামান ও উপজেলা প্রকৌশলী আবু সাঈদ এর কথা মত ফলক উন্মোচন করেছেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্রকৌশলী আবু সাঈদ জানান, বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে আবু জাফরের নামটি মুছে ফেলা হয়েছে।
(আরকে/এএস/আগস্ট ১৮, ২০১৪)