স্টাফ রিপোর্টার : মালয়েশিয়া থেকে ব্যাগেজের আড়ালে আমদানি করা হচ্ছে অভিজাত মাদক হিসেবে পরিচিত ‘আইস’। বাংলাদেশ আইস ডিমেথ, মেথান ফিটামিন বা ক্রিস্টালমেথ নামে পরিচিত অত্যন্ত দামি এই মাদকের বাজার তৈরির চেষ্টা চলছে। ‘সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম স্টিমুলেটিং ড্রাগস’ নামে পরিচিতি এই মাদক ইয়াবা থেকে ৫০ থেকে ১০০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, প্রতি ১০ গ্রাম আইস মাদক ব্যবসায়ীরা বিক্রি করে এক লাখ টাকায়, যা রাজধানীর অভিজাত ও উচ্চবিত্তরা ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিবার এই মাদক আইস সেবনে খরচ হয় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। ব্যয়বহুল এই মাদক অভিজাত শ্রেণির মাদকসেবী ছাড়া সেবন সম্ভব না।

বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, একটি নতুন মাদকের নাম আমরা বেশকিছু দিন ধরে শুনে আসছিলাম এবং বাংলাদেশেও এর অস্তিত্ব আছে বলে আমরা খবর পাই। এর প্রেক্ষিতে ডিবি রমনা বিভাগের ডিসি এইচএম আজিমুল হক, এডিসি জুয়েল রানা ও এসি জাবেদ ইকবালের নেতৃত্বে গতরাতে গেন্ডারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে চন্দন রায় (২৭) নামক এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী গুলশান, বনানী, বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আইস বিক্রি, সেবন ও পরিবহনের জন্য সিরাজ (৫২), অভি (৪৮), জুয়েল (৫০), রুবায়েত (৩০) ও ক্যানিকে (৩৬) আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৬০০ গ্রাম আইস উদ্ধার করা হয়, যার দাম প্রায় ৬০ লাখ টাকা।

আইস সম্পর্কে হাফিজ আক্তার বলেন, ১০ গ্রাম আইসের দাম ১ লাখ টাকা। সেবু, ক্রিস্টাল ম্যাথ, ডি ম্যাথসহ আইসের আরও নাম রয়েছে। এর কেমিক্যাল নাম মেথান ফিটামিন। আইসের উৎপত্তিস্থল অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও চায়না। এটি স্নায়ু উত্তেজক মাদক।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানায়, তাদের মধ্যে চন্দন রায় মূল ডিলার। তিনি তার প্রবাসী আত্মীয় শংকর বিশ্বাসের মাধ্যমে বিমানযােগে এগুলো সংগ্রহ করে ঢাকায় খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে উচ্চবিত্তদের কাছে বিক্রি করে।

অত্যন্ত দামি এই মাদক ব্যবহারে ক্ষতি অনেক বেশি। এটি সেবনের ফলে মাদকাসক্তরা দীর্ঘ সময় কাজ ও চিন্তা করার স্ট্যামিনা পায় বলে জানায়। দীর্ঘদিন এটি ব্যবহার করলে হৃদরােগ ও স্ট্রোক হয়। এছাড়া দাঁত ক্ষয়ে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নে দিকে যাচ্ছে। অভিজাত শ্রেণির লোকের সংখ্যা বাড়ছে। সব মাদকের বাজার তৈরির পেছনে অর্থলগ্নি করা হয়। বাংলাদেশে সেই চেষ্টা চলছে। এই মাদক গুলশান-বনানী এলাকার ইনডোর পার্টি সেন্টারে মাদক ব্যবহার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকদের কাছ থেকে এর সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় গেন্ডারিয়া থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ০৫, ২০২০)