শেরপুর প্রতিনিধি : অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানিতে শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার নিমাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ২০ গ্রামের অন্তত: ২৫ হাজার মানুষ। পানিবন্দী এলাকাগুলোতে গো-খাদ্যসহ বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

পানিবন্দী এলাকার লোকজন কলার ভেলা ও নৌকা যোগে অন্যান্য গ্রাম থেকে খাবার পানি ও গবাদি পশুর খাদ্য সংগ্রহ করছেন। উপজেলার পাগলারমুখ মালিঝি নদীর উপর বাঁশের সাকো দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে গ্রামবাসীদের পারাপার হতে দেখা গেছে। অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে এসব এলাকার গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট বিধ্বস্ত হয়ে আভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে শত শত একর জমির রোপা আমন আবাদ। বহু পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতি হয়েছে সব্জী বাগানের।
কৃষি সম্প্রষারণ অধিদপ্তর জানায় মহারশি, সোমেশ্বরী, কালাঘোষাসহ বিভিন্ন নদীর পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৬৫০ হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত ও কৃষকদের বীজতলা তলিয়ে গেছে। মালিঝি নদীর পানির তোড়ে পাগলারমুখ, কামারপাড়া সড়কটি হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। সোমেশ্বরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে শতাধিক একর ফসলি জমিতে বালুর স্তর পড়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক পানিবন্দী এলাকা পরিদর্শন করেন জানান, প্রায় ২০টি গ্রামের ২৫ হাজার বানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এদিকে, নালিতাবাড়ী উপঝেলার ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর পানি বিপদ সীমার অনেক নিচে নেমে গেলেও এসব নদীর ভাঙ্গনকবলিত আশপাশের জমিতে পাহাড়ি ঢলের কারণে প্রায় ৬০ একর জমিতে মোটা লাল বালির আস্তরণ পড়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। ফলে আবাদ অযোগ্য হয়ে পড়েছে ওইসব জমি। এসব জমির মালিকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। নালিতাবাড়ী পৌর শহরের খালভাঙ্গা এলাকায় পুরনো দুটি ভাঙ্গন দিয়ে বারবার পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করায় এ এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কাচা-পাকা রাস্তা। এমনকি বন্যার কারনে ভাঙ্গনকৃত রাস্তায় সদ্যনির্মিত ১০০ মিটার দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোও বিধ্বস্ত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার মানুষ এখন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও।
(এইচবি/এএস/আগস্ট ১৮, ২০১৪)