আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার বীর বিক্রম শহীদ আহসানুল হক ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আসাদুল হকের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তাকে পুনরায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে দর্শনের শিক্ষক হিসেবে এক বছরের জন্য নিয়োগ দান করলেও কলেজ পরিচালনা কমিটি প্যাটানভুক্ত শিক্ষক না হলেও পুনরায় আসাদুল হককে অধ্যক্ষ করায় কলেজের শিক্ষকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ একেএম আসাদুল হকের বয়স ৬০বছর পূর্ণ হওয়ার প্রেক্ষিতে ২৪অক্টোবর/২০২০ তারিখে তিনি অবসর গ্রহন করেন। অবসর গ্রহনের পর কলেজের উপাধ্যক্ষ দায়িত্ব পাওয়ার বিধান থাকলেও কলেজ প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৬বছরেও রহস্য জনক কারনে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কলেজ পরিচালনা কমিটি, অধ্যক্ষের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে পাঠদানের স্বার্থে অধ্যক্ষ আসাদুল হককে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করেন।

কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরীত এক চিঠিতে আসাদুল হককে দর্শনের শিক্ষক হিসেবে গত ১০অক্টোবর পুন: নিয়োগ প্রদান করেন। কিন্তু জনবল কাঠামো অনুযায়ী ওই কলেজে দুই জন দর্শনের শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এদিকে পাঠদানের জন্য শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেও গত ২৪ অক্টোবর কলেজ পরিচালনা কমিটির কয়েকজন সদস্য সভাপতির অনুপস্থিতে সাবেক অধ্যক্ষ আসাদুল হককে পুনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটি অনেকটাই পারিবারীরিক কমিটি। সভাপতি, অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধি ছাড়া অপর সব সদস্য অধ্যক্ষের ভাই, মামা, মামাতো দুই ভাই ও ভায়রা ও নিকটত্মীয়। এ সকল পারিবারিক সদস্যদের অধিকাংশ প্রায় দীর্ঘ ২৬বছর ধরে কলেজ পরিচালনা কমিটিতে রয়েছেন। কমিটি কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে উপাধ্যক্ষ পদে কোন নিয়োগ দেয়নি পরিচালনা কমিটি । এ কারনে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেলেও পারিবারিক কমিটি কলেজ দখলে রাখার জন্য আসাদুল হককে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

তারা আরো বলেন, অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে আসাদুল হক কলেজ সরকারি করা হবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের নিকট থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ছাড়া কলেজে অর্নাস কোর্স চালু না থাকলেও অধ্যক্ষ অর্নাস বিষয়ে ১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলে শিক্ষকদের অভিযোগে জানা গেছে।

কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আদমদীঘি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহামুদুর রহমান পিন্টু বলেন, আমার সভাপতির বয়স মাত্র পাঁচ মাস। আগের কোন বিষয় আমার জানা নেই। এ ছাড়া সাবেক অধ্যক্ষের পুন: নিয়োগ সভায় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে সংখ্যগরিষ্ঠ সদস্য স্বাক্ষর করায় রেগুলেশনে স্বাক্ষর করেছি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটির আবেদনের প্রেক্ষিতে আসাদুল হককে পাঠদানের স্বার্থে এক বছরের জন্য শিক্ষক হিসেবে পুন: নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী কাউকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কমিটি তাকে যদি নিয়োগ দেয় সেটি তাদের বিষয়। যেহেতু অধ্যক্ষের চাকুরীর মেয়াদ শেষ সে কারনে তিনি আর কোন সরকারি আর্থিক সুবিধা পাবেন না।

(এস/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২০)