রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রৌমারীতে আরজিনা খাতুন (১৬) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে জবাই করে হত্যার দায়ে আনারুল হক (২০) নামের এক যুবককে আমৃত্যু কারাদণ্ডদেশ দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত। 

সোমবার(৯ নভেম্বর)দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক আব্দুল মান্নান এ রায় প্রদান করেন। মামলায় অপর দুই আসামীকে খালাস প্রদান করেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বিগত ২০১৫ সালের ১৪ জুন সকাল ১১টার সময় রৌমারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেংটাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বাতেনের পূত্র আইয়ুব আলী (২০) ও বাতার গ্রামের ছফের আলীর পূত্র আনারুল হক (২০)সহ অজ্ঞাতনামারা পার্শ্ববর্তী বোয়ালমারী গ্রামের মৃত আব্দুল হাই আকন্দের ছোট মেয়ে এবং শৌলমারী এমআর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সদ্য এসএসসি পাশ করা আরজিনা খাতুনকে তাদের রান্নাঘরে নিয়ে গিয়ে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। আসামী আইয়ুব আলী আরজিনাকে প্রেমের প্রস্তাব দিলে প্রতিবাদ করে মেয়েটি। এ নিয়ে অভিভাবক পর্যায়ে জানান মেয়েটি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সঙ্গীদের নিয়ে এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করা হয়।

এ ঘটনার পর আসামী আইয়ুব আলী চেংটাপাড়া গ্রামে ফিরে এসে জনৈক কোমল রবিদাসের বাড়ির পাশে ডোবায় গায়ের রক্ত ধোয়ার সময় অজ্ঞান হয়ে পানিতে পরে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর দীর্ঘ শুনানী শেষে সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিজ্ঞ বিচারক অপর আসামী আনারুল হককে আমৃত্যু কারাদন্ডাদেশ’র রায় দেন। এছাড়াও তদন্তে অভিযুক্ত একই গ্রামের নজরুল ইসলামের পূত্র রায়হানুল ইসলাম ও আব্দুল মান্নানের পূত্র আব্দুর রশিদকে আদালত বেকসুর খালাস প্রদান করেন। আসামী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মুহা. ফকরুল ইসলাম এবং রাষ্ট পক্ষে ছিলেন পিপি অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম আব্রাহাম লিংকন জানান, এই রায়ের মাধ্যমে সহিংসতাকারীদের প্রতি একটি শক্ত বার্তা প্রেরণ করা হল। দেশ স্বাধীনের পর কুড়িগ্রাম আদালতে আমৃত্যু কারাদন্ডাদেশের রায় এই প্রথম বলে তিনি জানান।

(পিএস/এসপি/নভেম্বর ০৯, ২০২০)