মো. আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : নানান জাতের দেশী-বিদেশী পাখি এবং বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রবিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দারাগাঁও চা বাগানে পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ক সামাজিক সংগঠন ‘মিতা ফাউন্ডেশন’আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকারের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে গণসচেতনামূলক পরামর্শ দিয়েছে বন বিভাগের সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত বন কর্মকর্তারা।

ব্যতিক্রমী এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাতছড়ি বন্যপ্রাণী রেঞ্জের আওতাধীন তেলমাছড়া বিটের বিট কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিতা ফাউন্ডেশনের মূখ্য সমন্বয়কারী সাংবাদিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন।

বিট কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন মিতা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন, ‘আমাদের বন্যপ্রাণী আমাদের দেশের সম্পদ।এই সম্পদকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ আইন-২০১২ সম্পর্কে সাধারণ মানুষ কিছুই জানেন না। তারা না জেনে পাখি শিকারসহ বিশেষ কিছু প্রজাতির পাখি অধিক টাকায় সংগ্রহ করে নিজের বাড়িতে খাচায় বন্দী করে দিনের পর দিন পালন করে থাকেন। এখন বন্যপ্রাণী আইন সম্পর্কে মানুষ যদি জানতেন, তাহলে তারা এ বেআইনি কাজটি করতেন না। এই বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ আইন-২০১২ সম্পর্কে স্থানীয় মানুষদেরকে সচেতন করার যে দায়িত্ব মিতা ফাউন্ডেশন নিয়েছে – সেজন্য কমিটির সকল সদস্যদের আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

মিতা ফাউন্ডেশনের মূখ্য সমন্বয়কারী সাংবাদিক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন বলেন, ‘শীতমৌসুমে পাখিসহ বন্যপ্রাণী শিকার বেড়ে যায়। আমাদের কাছে নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে যে, এই দারাগাঁও চা বাগানের হাতিমারা এলাকাসহ এর আশাপাশের বিভিন্ন স্থানে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে পাখি এবং বন্যপ্রাণী শিকার বা পাচার হয়ে থাকে। তাই এখানে আমরা ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছি যাতে করে এই পাখি এবং বন্যপ্রাণী শিকার বা পাচার বন্ধ করা যায়। ইতোমধ্যে আমরা এর সুফল পেতে শুরু করেছি। এখানে কমতে শুরু করেছে পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকার। যে এলাকাতেই এমন পাখি এবং বন্যপ্রাণী শিকার হবে সেখানেই আমরা স্থানীয় কমিটি গঠন করে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরি করার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবো।’

অনুষ্ঠানে বন্যপ্রাণী আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন তেলমাছড়া বিটের জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট মো. রোকন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই এই ম্যাসেজটি আপনাদের এলাকার সাধারণ মানুষদের মাঝে ছড়িয়ে দেবেন যেন সবাই পাখি এবং বন্যপ্রাণী শিকার থেকে বিরত থাকেন।’

রবি কস্তাকে সমন্বয়কারী করে মিতা ফাউন্ডেশন, দারাগাঁও চা বাগানের ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্যরা হলেন- নাসির উদ্দিন, পিয়ুস কস্তা, জাহির খান, শামীম খান, লুকাস ভার, সুজিত গোয়ালা, রনি সুঙ, দিলিপ চামুগং, ভজন চৌহান এবং ইসমাইল আলী।

অনুষ্ঠানে স্থানীয় চা বাগানের শ্রমিক, পার্শ্ববর্তী বৈরাগী খাসিয়াপুঞ্জির অধিবাসী এবং নবগঠিত দারাগাঁও চা বাগান আহ্বায়ক কমিটির সদস্যদের মাঝে গণসচেতনামূলক পরামর্শ প্রদান করা হয়।

(একে/এসপি/নভেম্বর ১০, ২০২০)