মাহাবুব রহমান দুর্জয়


বুঝলাম যে সরকারের এই করা দরকার, সেই করা দরকার! কিন্তু স্বাধীন দেশের নাগরিক আপনি; আপনার কি করা দরকার? করেছেন কি? একটি দেশের সকারেরর চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সে দেশের নাগরিক। নাগরিকরা চাইলে রাষ্ট্রের চলমান অনিয়ম এবং অসঙ্গতি গুলো খুব সহজেই উপরে ফেলতে পারেন। যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক এবং প্রয়োজনীয় সচেতনতা থাকলে রাষ্ট্রীয় শাখা প্রশাখা সরল রেখায় অবস্থান করতে বাধ্য। এখন প্রশ্ন হলো আমরা নাগরিকরা কি সতর্ক এবং সচেতন আছি?

উত্তর যদি না হয় তবে রাষ্ট্রকে আঙ্গুল দেখানোর আগে আঙ্গুলটা নিজের দিকেই রাখুন। যেখানে যেখানে আপনি নিজেকে সৎ এবং নির্ভেজাল বলতে পারবেন না প্রথমত সেই সব বিষয়গুলো পরিষ্কার করুন। এরপর আপনার পরিবারের সদস্যদের প্রতি খেয়াল রাখুন, তারা যদি অন্যায় ও অসৎ পথে চলে তাদেরকে সঠিক পথে আনার নৈতিক দায়িত্ব নিন। কাজ না হলে আইনের সহায়তা নিন, এভাবে যদি আমরা রুটিন করে চলতে পারি তাহলে রাষ্ট্র সরল রেখায় চলবে শতভাগ গ্যারান্টি।

দাপ্তরিক অর্থে আমরা ১৬ কোটি নাগরিকের একটি ছোট্ট দেশে বসবাস করি। এখানে আমরা সবাই অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস রেখে জীবন যাপন করি। যার যার ধর্ম পালনে এখানে নেই কোন প্রতিবন্ধকতা, নেই রাষ্ট্রীয় কোন নিষেধাজ্ঞা বা বিধিনিষেধ। একে অপরের প্রতি আন্তরিকতা এবং সহমর্মিতাই এদেশের প্রতিটি নাগরিকের অন্তরের বাসনা। এত কিছুর পরও আমরা রাষ্ট্রযন্ত্রের অনিয়ম এবং প্রশাসনিক গুরুতর দুর্নীতিগুলো বন্ধ করতে পারছি না। কেন পারছি না?

কেননা, আমরা এখন আমাদের নিজেদের চরিত্রকেই বিশ্বাস করতে পারি না, নিজেরাই নিজেদের উপর ভরসা রাখতে পারি না। আমরা সবাই মুখে নীতিবান কিন্তু অন্তরে বিষাক্ত পয়জন জমিয়ে রাখি। যতদিন মুখের সাথে অন্তরের মিল হবে না ততদিন দেশ নিয়ে চিন্তা করে লাভ নেই। দু'মুখো মানুষের চিন্তায় রাষ্ট্রের কোন উপকার হয় না, হবেও না।

দেশ, জাতি ও মানবতার কথা বলতে হলে নিজের অন্তর পবিত্র করুন। পবিত্র অন্তরে দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য কাজ করুন। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অবকাঠামো সুন্দর ও সুশৃঙ্খল হতে সময় লাগবে না। আমরা পারি, আমরা পারবো নিজেকে বদলাতে এই শ্লোগান নিয়ে এগিয়ে চললে সকল অনিয়ম নিজে নিজেই নিয়ম করে পথ চলবে।

নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করি, অন্যের ভুল খুঁজে বের করার আগে নিজের ভুলগুলো সমাধান করি। তখন দেখবেন কোথাও আর অনিয়ম হচ্ছে না। সরকার তখন আপনার আমার চাহিদাগুলো সঠিক নিয়মে যথা সময়ে করতে পারবে। আমাদের প্রত্যাশাও তাই।

ভালো থাকুক দেশ; ভালো থাকুক প্রতিটি নাগরিক!

লেখক :সংগঠক, তরুণ লেখক ও শিক্ষানুরাগী।