স্টাফ রিপোর্টার : কর্ণফুলী উপজেলা এলজিইডি অফিস ভাঙচুর এবং হিসাবরক্ষককে মারধরের ঘটনারায় ফেঁসে যাচ্ছেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম ও তার স্বামী মামুনুর রশিদ প্রঃ মােঃ আবুল কাশেম ভূঁইয়া।

কর্ণফুলি থানা পুলিশ এই দুইজনকে আসামী দেখিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিএমপি কর্ণফুলী থানা এসআই মো. আলমগীর হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আগামী ৬ ডিসেম্বর চার্জশিটের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আদালতে দায়ের করা তিন পৃষ্ঠার চার্জশিটে ৯ জনকে সাক্ষী এবং মামলায় আলামত হিসেবে উদ্ধার দেখানো হয়েছে একটি পুরাতন এইচপি এলসিডি মনিটর, একটি পেপার প্লেট ভাঙা প্রিন্টার।

হামলা ও মারধরের ঘটনার তিনমাসের মধ্যে আলোচিত এ মামলার চার্জশিট আদালতে দাখিল করা হলো। থানার অভিযােগপত্র নং-৩৫০। ধারা-৪৪৮/৩৩২/৩৫৩/৪২৭/৫০৬। এ মামলার তদন্ত উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি অফিসে প্রবেশ করে জিনিসপত্র ভাঙচুর এবং হিসাব রক্ষকের সাথে হাতাহাতির ঘটনাটি সত্য ছিল।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, আসামী বানাজা বেগম নিশি ও মামুনুর রশিদ প্রঃ মােঃ আবুল কাশেম ভূঁইয়া পরস্পর স্বামী-স্ত্রী। বানাজা বেগম নিশি মেসার্স নিসাম কনস্ট্রাকশন ফার্ম নামীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক। ২০১৮-২০১৯ ইং অর্থ বছরে এডিপি একটি কাজ পায় তার প্রতিষ্ঠান। নিয়ম মতে কাজটি সম্পন্ন করা হলেও বানাজা বেগম নিঁশির মালিকানাধীন প্রদত্ত ১০% জামানত এর টাকা ফেরত পাননি। প্রতিষ্ঠানের জামানতের টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আসামীর ভাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবরে আবেদন করেন।

পুলিশি প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ্য করা হয়, গত ২৬ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টায় আসামী বানাজা বেগম নিশি (৩৬) ও মামুনুর রশিদ (৪৯) কর্ণফুলী উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে কক্ষে প্রবেশ করেন। মামলার বাদী হিসাবরক্ষক মো. রফিক উল্যাহ’র কাছে জানতে চান ফাইলের অবস্থা সম্পর্কে। তখন বাদী ফাইলটি উপ-সহকারী প্রকৌশলীর মতামতের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান। একথা শোনা মাত্রই আসামীরা বাদীকে হুমকি দিয়ে অফিস কক্ষ ত্যাগ করে।

এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ আরও জানতে পারেন, ঘটনার দিন বেলা ১২:৩০মিনিটে আসামিরা পুনরায় এসে এলজিইডি অফিস কক্ষে প্রবেশ করে। আবারও তথ্য জানতে চান। পরে হিসাব রক্ষকের কোন সাড়া না পেয়ে সরকারী কাজে বাধা প্রদান করে বাদী মো. রফিক উল্যাহকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। বিভিন্ন সরকারী ফাইলসহ টেবিলে থাকা কম্পিউটারের প্রিন্টার ও মনিটর ফেলে দেন। এতে কম্পিউটারের প্রিন্টারের পেপার প্লেট জেঙে যায়।

এসময় অপর আসামী মামুনুর রশিদ (৪০) অফিসের ওয়ার্কিং টেবিল ও চেয়ার উল্টাইয়া দিয়ে অফিসের ফাইলপত্র ও কাগজপত্র তহনছ করে ক্ষতি করেন। বানাজা বেগম নিঁশি হিসাব রক্ষকের সাথে হাতাহাতিতে লিপ্ত হন। বাদির চোখে থাকা চশমাটি টান দিয়া নিচে ফেলে ভেঙে ফেলেন। অফিসের অন্যান্য সহকারি মাে. জসিম উদ্দিন ও মাে. নাসির উদ্দিন আসামীদের বাধা দিলে তাদের প্রতিও চড়াও হয়ে হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই কর্ণফুলীর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অফিস কক্ষে ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় হিসাবরক্ষক মো. রফিক উল্যাহ বাদী হয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম নিঁশি (৩৬) ও তাঁর স্বামী মামুনুর রশিদ (৪০) এর নামে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়। নাম উল্লেখিত দুই আসামি আদালতে জামিনে রয়েছেন।

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২০)