চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হয়েও কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদে ৭ মাস যাবত এখনো বহাল তাসকিন শাকিব। এ নিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।  

ছাত্রলীগের এই নেতার বিরুদ্ধে আরিফ হোসেন দোভাষ (২২) হত্যায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছুদিন আগে আত্মসমর্পণ করলে তাঁকে জেলে পাঠিয়েছে আদালত। মামলাটি চলমান রয়েছে।

বিগত ১২ মার্চ অনুমোদিত কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত কমিটিতে হত্যা মামলার আসামি তাসকিন শাকিব কে সদস্য নির্বাচিত করা হয়।

কর্ণফুলীর দোভাষ হত্যা মামলায় প্রথমে অভিযুক্ত পরে চার্জশিটভূক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে উপজেলা ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো বহাল, এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের অনেকেই বলেন, সরকার যেখানে অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন, সেখানে উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য পদে একজন হত্যা মামলার আসামি থাকাটা খুবই দুঃখজনক।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে উপজেলা ছাত্রলীগের এক সাংগঠনিক সম্পাদক জানান, বর্তমানে ছাত্রলীগে শুদ্ধি অভিযান চলছে। কোন ছাত্রলীগকর্মী বা নেতা অনুপ্রবেশকারী, হত্যা মামলা ও মাদকের সঙ্গে জড়িত, এমন প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়। কিন্তু তাসকিন শাকিবের বেলায় ৭ মাসেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি আমি জানি না।'

কর্ণফুলী উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদ সাজিদ বলেন, এবিষয়ে জেলা কমিটি সিদ্ধান্ত নিবেন। কর্ণফুলী উপজেলার আহ্বায়ক কমিটি যেহেতু জেলা নেতাদের স্বাক্ষরে অনুমোদিত।'

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম বোরহান উদ্দিন কোন মন্তব্য করতে রাজি না হলেও সাধারণ সম্পাদক মো. আবু তাহের জানান, ঘটনাটি প্রথম থেকেই খোঁজ খবর নিয়েছিলেন। তাতে মনে হয়েছে তাসকিন সাকিব ষড়যন্ত্রের শিকার। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।'

প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল সকাল ১০টা কর্ণফুলীর চরলক্ষ্যা গ্রামের খুদ্যারটেক বানুর বাপের বাড়িতে চুরির ঘটনা নিয়ে বসা শালিসি বৈঠকে আরিফ হোসেন দোভাষ (২২) গুরুতর আহত হয় এবং ঘটনার দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু ঘটে। এতে ভিকটিমের বাবা আহম্মেদ হোসেন বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় ৭জনকে আসামি করে হত্যা (মামলা নং-১০) দায়ের করেন।

মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের খুদ্যারটেক বানুর বাপের বাড়ির শেখ শেখ আহমদ (৫০) ও তার দুই ছেলে মামলার প্রধান আসামি কায়সার (২০), দিদার (২৪), মো. পারভেজ (২২) ও তাসকিন সাকিব (২০) । এছাড়াও মামলায় নুরুল আলম প্রকাশ এন.এ রাজু (২৬), ও পাকিজা খাতুন (৪২) পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১১, ২০২০)