তপু ঘোষাল (সাভার উপজেলা) : রাজধানীর সন্নিকটে সাভারের রাজফুলবাড়ীয়া এলাকায় সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আপন ভাতিজি সুমী আক্তার (৩৫)’কে বেধড় পিটিয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় পাশের সবজি খেতে ফেলে রেখে গেছে তারই আপন চাচা খেজমত আলী (৪৫)। মুমূর্ষু সুমীর গুঙ্গানীর শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেন। সুমীর দু’পা ও এক হাত ভাঙ্গা এবং সমস্ত শরীরে জখম নিয়ে বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

রাতে সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়ী ছাগীপাড়া রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সাভার মডেল থানায় পরিচয়ধারী ৭ জনকে এবং অজ্ঞাত ৪/৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত আসামীদের মধ্যে ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়ীয়া ছাগীপাড়া রামচন্দ্রপুর গ্রামের সুমীর আপন চাচা খেজমত আলী (৪৫) ও অপরজন একই গ্রামের মেহেদী হাসান অপু (২২)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে সুমীর বাবা কদম আলীর সাথে তারই আপন ভাই খেজমত আলীর বছর ধরেই বিরোধ চলে আসছিলো। কদম আলী লেখাপড়া না জানলেও তার মেয়ে সুমী আক্তার (৩৫) লেখাপড়া জানায়, সে তার বাবার জমির কাগজপত্র ভালো বুঝতো। আর তা মোটেও ভালোভাবে দেখতো না চাচা খেজমত আলী ও তার ছেলেরা। সে কারণেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাতে খেজমত আলী তার ছেলে ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে কদম আলীর বাড়ী সংলগ্ন গরুর ফার্মে হামলা চালিয়ে সুমীকে একা পেয়ে তাকে বেধড় পিটিয়ে মৃতভেবে পাশের সবজি খেতে ফেলে রেখে যায়। পরে মানুষের গুঙ্গানীর শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় সবজি খেতে পড়ে থাকা সুমীকে উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

এনাম মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, সন্ত্রাসী হামলায় সুমীর দু’পা ও এক হাত ভেঙ্গে যায় এবং তার সারা সমস্ত শরীরে আঘাতের জখম রয়েছে।

আহত সুমীর বাবা কদম আলী জানান, পৈত্রিক সম্পত্তি ছাড়াও তিনি তার মায়ের নিকট থেকে সম্পত্তি কিনে নেওয়ায় তার সম্পত্তি অন্য ভাইদের চেয়ে বেশী, যা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলোনা ভাইয়েরা। কদম আলীর অভিযোগ তার আপন ভাই খেজমত আলী তার ছেলে ও সন্ত্রাসীদের নিয়ে তার মেয়ে সুমীকে মেরে ফেলবার জন্যই রাতে হামলা চালিয়েছে এবং বেধড় পিটিয়ে মৃত ভেবে ফেলে রেখে গেছে। তার মেয়ে সুমী শিক্ষিত হওয়ায় জমির কাগজপত্র ভালো বুঝতো, যা মোটেও ভালো চোখে দেখতো না সুমীর চাচা ও চাচাতো ভাইয়েরা।

সাভার মডেল থানা ইন্সপেক্টর তদন্ত জানান, ভোক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া মামলার ২ আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং মামলার অন্য আসামীদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

(টিজি/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০২০)