চাঁদপুর প্রতিনিধি : হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলার ৫ সহস্রাধিক গ্রাহক দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে চুলায় পর্যাপ্ত গ্যাস পাচ্ছে না। এ সকল গ্রাহক নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করার পরও চাহিদা মতো গ্যাস না পাওয়ায় ইতিমধ্যে তারা ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে।

হাজীগঞ্জ এলাকায় গ্রাহক লাইন থেকে পর পর দুটি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেয়ার কারণে লাইনে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় এমনটা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে ডিআরএস স্থাপন করা হলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে জানা গেছে। আর এটি স্থাপনে গড়িমসি হচ্ছে বলে গ্রাহকরা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর শহরে অবস্থিত মূল স্টেশন থেকে সংযোগ হয়ে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ দিয়ে একটি গ্যাস লাইন হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলায় গেছে। এ লাইন থেকে মহাসড়কের দু’পাশে আবাসিক সংযোগ দেয়া হয়েছে। আবাসিক লাইন থেকে শিল্পাঞ্চলে সংযোগ দেয়ার কোনো বিধান নেই। অথচ গত কয়েক বছর আগে এ লাইন থেকে হাজীগঞ্জস্থ ধেররা ও মকিমাবাদ এলাকায় দুটি সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়। এরপর থেকে উক্ত সিএনজি স্টেশন দুটির শেষ অংশে অর্থাৎ ধেররা এলাকা থেকে শুরু করে হাজীগঞ্জ বাজার এলাকা, আলীগঞ্জসহ পুরো শাহরাস্তি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার গ্রাহকের গ্যাসের চাপ কমে যায়। যার কারণে যতক্ষণ সিএনজি স্টেশন দুটি চালু থাকে ততক্ষণ ধরে ঐ এলাকার গ্যাস গ্রাহকরা চুলায় গ্যাস পায় না। এ কারণে এ সকল গ্রাহকের রান্নার কাজে প্রচণ্ড ধরনের ব্যাঘাত ঘটছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান। আর এ সমস্যাটি বেশি ঘটছে ভোর ৬টা থেকে রাত ৯টা কিংবা সাড়ে ৯টা পর্যন্ত।

এদিকে দু উপজেলার গ্রাহকরা চুলায় পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ার কারণে বাখরাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ উক্ত লাইনে গ্যাসের চাপ বাড়ানোর জন্য হাজীগঞ্জ রেল স্টেশন এলাকায় একটি ডিআরএস মেশিন স্থানের সিদ্ধান্ত নেয়। এ কাজের আওতায় ডিআরএস মেশিন থেকে দুটি লাইন হাজীগঞ্জ বাজার অংশে মেইন লাইনে সংযুক্ত হবে। এরই মধ্যে উক্ত স্থানে ডিআরএস মেশিন স্থাপনের সকল প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এ কাজটি বর্তমানে থেমে গেছে।

চুলায় পর্যাপ্ত গ্যাস না পাওয়ার কারণে গ্যাস গ্রাহক হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব অরুণ, আলীগঞ্জ এলাকার বাচ্চু মিয়া, জগন্নাথপুর এলাকার মহিউদ্দিন মজুমদার এবং শাহরাস্তি উপজেলার আলীপুর মজুমদার বাড়ির আলহাজ্ব শাহাদাত হোসেন মজুমদার জানান, নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ করা হচ্ছে কিন্তু চুলায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না এটা কেমন হলো। আর গ্রাহকরা যেভাবে ফুঁসে উঠতে শুরু করেছে কোন্ দিন জানি মহাসড়কে অবরোধ সৃষ্টি করে তা আল্লাহই ভালো বলতে পারেন।

হাজীগঞ্জে যে ডিআরএস মেশিনটি স্থাপন হবে তার ঠিকাদার হলেন নোয়াখালী জেলার আলমগীর হোসেন। মুঠোফোনে আলাপকালে তিনি জানান, উক্ত অংশে দুটি লাইনের মধ্যে একটি মোটা লাইন রয়েছে আর এ জাতীয় লাইনের কাজ করতে হলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে, সেটি হাতে পেলেই কাজ শুরু হবে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, শুনেছি বাখরাবাদে কিছু মালামালের অভাব রয়েছে, তার পরেই কাজ শুরু করা হবে। তবে আসছে সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু হবে।

এ বিষয়ে বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার (প্লানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট) জসিম উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এখন বৃষ্টি হওয়ার কারণে কাজ করা যাচ্ছে না। আশা করি আসছে সপ্তাহের মধ্যে কাজ শুরু করা হবে। উক্ত কাজের মালামালের অভাব আছে ঠিকাদারের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, আগে ঠিকাদার কাজ শুরু করুক তার পরেই দেখা যাবে।

(এমজে/এইচআর/আগস্ট ১৯, ২০১৪)