স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর আজিমপুরের বাসিন্দা গৃহবধু সাহানারা খাতুন। সব প্রস্তুতি সেরে দুপুরের রান্নার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে দেখলেন টিমটিম করে জ্বলছে চুলা। হাঁড়ি চড়ানোর দুই-তিন মিনিটের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় চুলা।

বৃহস্পতিবারের (১২ নভেম্বর) ঘটনা এটি। দুপুর ১টার দিকে তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরে দুপুর হতে না হতেই লাইনে গ্যাস থাকে না। তাই দুপুরে রান্নাও করা যাচ্ছে না। গ্যাসের সরবরাহ ঠিক হতে হতে সেই বিকেল বা সন্ধ্যা। তাই সে পর্যন্ত হালকা নাশতা খেয়ে থাকতে হয় অথবা রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হয়।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সাহানারা বলেন, ‘শীতকাল না আসতেই যদি এ অবস্থা হয় তবে শীত এলে তো গ্যাসের সঙ্কটে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে। প্রতিদিন তো আর বাইরে থেকে খাবার কিনে আনা সম্ভব না।’

শুধু সাহানারা একাই নন, গ্যাস সঙ্কটের কারণে দুপুরের রান্না করতে না পেরে অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের জরুরি অভিযোগ কেন্দ্রে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক নাগরিক গ্যাসের চাপ কম থাকা কিংবা হঠাৎ গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার অভিযোগ করছেন।

কিন্তু অভিযোগ নেয়ার পর ‘কিছুই করার নেই’ বলে ভোক্তাদের স্বান্ত্বনা দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে তিতাসের জরুরি অভিযোগ কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘লাইনে গ্যাসের চাপ কম থাকায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রেশনিং করে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। মূল লাইন থেকে গ্যাসের চাপ অর্ধেকে নেমে আসায় আগের মতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না। শীতকালে আবহাওয়া অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা থাকায় গ্যাস জমে যায় এবং যেখান থেকে এ খনিজ উত্তোলন করা হয় সেখানেও চাপ কম থাকে।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘গ্যাসের সঙ্কট এখনও খুব বেশি হচ্ছে না। পিক আওয়ারে না থাকলেও বিকেল বা সন্ধ্যার পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিকই থাকে।’

সামনে সঙ্কট আরও বাড়তে পারে বলে তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেন।

রাজধানীর চকবাজারের বাসিন্দা আলী আফজাল বলেন, ‘চলমান এই মহামারিতে গ্যাসের সঙ্কট নগরবাসীকে ভীষণ ভোগাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার এনে খেতে হচ্ছে। তিতাসের এক পরিচিত কর্মকর্তা ইলেকট্রিক গ্যাসের চুলা ব্যবহার করতে বলেছেন।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১২, ২০২০)