চটগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক-পুরাতন ব্রিজঘাট সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়ক দখলের মহোৎসব চলছে। এ সড়কের সৈন্যেরটেকে দুপাশে বড় বড় গার্মেন্টস ও মিল কারখানা। নেই তাদের পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। সড়কের উপরেই তাদের অবৈধ যানবাহনের পার্কিং। 

সরেজমিনে দেখা যায়, গোল্ডেন সান লিমিটেড (জিএসএল) কারখানার সামনে সড়কের এক পাশ দখল করে বাস পার্কিং এর নামে ৩ ফিট পাকা দেয়াল তোলা হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, জায়গাটি এক সময় বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখলেও এখন ব্যস্ততম এ সড়কের পাশে পাকা দেয়াল তোলা হয়েছে। ফলে যান চলাচলের রাস্তাটি সংকুচিত হয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি।

এলাকা ঘুরে আরো দেখা যায়, এ সড়কের প্রায় তিন কিলোমিটার দুপাশের জমি নব্বই শতাংশ অবৈধ দখলদারদের দখলে রয়েছে। সিডিএ'র পানি চলাচলের নালারও অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সড়ক দখল করে পোশাক শ্রমিক আনা নেওয়ার বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে রাস্তার উপর পার্কিংয়ে রাখা হয়।

লোকজন জানান, উপজেলার ব্রিজঘাট, খােয়াজনগর কাঁচাবাজার, চরলক্ষ্যার বাের্ড বাজার, কর্ণফুলী থানা ও ফেরিঘাট এলাকার সাধারণ মানুষ এ যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দূরপাল্লার অনেক বাস (দুপুরে ও রাতে) সড়ক দখল করে থাকায় এলাকায় প্রতিদিন যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে সাধারণ মানুষকে প্রতিদিন ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এলাকার সিএনজি চালক হানিফ বলেন, সৈন্যেরটেক গার্মেন্টেস এর সামনের সড়কের এক পাশ দখল করে থাকে দূরপাল্লার বাসগুলো। ফলে চলাচলের রাস্তা সংকুচিত হয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি দেখা দেয়। কয়েকদিন আগেও একজন শ্রমিক মারা যান। সড়ক থেকে বাস পার্কিং উঠিয়ে দেয়া জরুরি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটক থেকে পুরাতন ব্রিজঘাটের সাড়ে ৩ কিলােমিটার সিডিএ সড়ক নগরীর গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। অথচ জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে দখল করে রাখার অভিযােগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। এ সড়কের খােয়াজনগর আজিমপাড়া এলাকায় দুটি পােশাক কারখানা সিডিএ সড়কের অধিকাংশ জায়গা দখল করে রেখেছে। পােশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক যাতায়াতের জন্য প্রধান সড়কে অবৈধ বাসস্ট্যান্ড স্থাপন করায় তীব্র যানজট দেখা দেয়।

পথযাত্রীদের অভিযােগ, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের প্রত্যক্ষ সহযােগিতায় চরপাথরঘাটা খােয়াজনগর সৈন্যেরটেক এলাকার দুটি প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারিতায় তৈরি হলো অঘােষিত বাসস্ট্যান্ড। জনদুর্ভোগ লাঘবে অবৈধ এই বাসস্ট্যান্ড সরিয়ে নেয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। পাশাপাশি অবিলম্বে উচ্ছেদের মাধ্যমে সড়কটি সচল ও আরে প্রশস্ত করা প্রয়ােজন।

এদিকে এলাকার সচেতন মহল জানান, কোনাে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেনো নিজেদের ক্ষমতাবলে সরকারি সড়ক দখল করে জনস্বার্থ বিঘ্নিত না করে সেদিকে সদয় দৃষ্টি রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনােযােগ আকর্ষণ করেছেন।

কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা বলেন, কেউ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেনি। তারপরেও বিষয়টি যেহেতু নজরে আসল। অবশ্যই জনস্বার্থে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

গোল্ডেন সন লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বেলাল আহমেদ এর কোন বক্তব্য পাওয়া না গেলেও অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ফ্যাক্টরীর স্টেট অফিসার ওমর হায়দার বলেন, দেয়ালটি আমরা কোন সড়কের জায়গা দখলের জন্য তুলেনি। আমাদের ফ্যাক্টরীর সীমানা দেয়াল রয়েছে। পাশের দোকানদারেরা খালি জায়গাটিতে নানা ময়লা আবর্জনা ফেলে স্তুপ করে রাখেন। ফলে কারখানা ছুটি হলে শ্রমিকেরা দাঁড়ানোরও জায়গা পায় না। তাই জায়গাটি পরিস্কার করে রাখা হয়েছে।'

(জেজে/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০২০)