মো.আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজার শহরের পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কোঁদালীছড়া খনন ও ছড়ার দুই পাশে আরসিসি দেয়াল নির্মাণ, পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলাসহ ছড়াকে কেন্দ্র করে এর বহুমাত্রিক ব্যবহারের লক্ষ্যে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উন্নয়ন কাজের আনুষ্ঠানিক কার্যাদেশ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কোঁদালীছড়ার এই চার কিলোমিটার খনন ও আরসিসি দেয়াল নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অধিনস্থ প্রতিষ্ঠান এলজিইডি।

শনিবার (১৪ নভেম্বর) দূপুরের দিকে শহরের পৌর জনমিলন কেন্দ্রে কোঁদালীছড়া উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে এই কার্যাদেশ হস্তান্তর সম্পন্ন করা হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মল্লিকা দে’র সভাপতিত্বে ও জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন মাসুদ এর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মৌলভীবাজার পৌর সভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসান মোঃ নাসের রিকাবদার, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ কামাল হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট রমাকান্ত দেসহ সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

মতবিনিময় সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে মৌলভীবাজার পৌর সভার মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান জানান,সকলের সহযোগীতিায় বিশাল কর্মযজ্ঞের কারনে কোঁদালীছড়া আজ অনেকটা দখলমুক্ত, খননের কারনে গত তিন বছর যাবত মৌলবীবাজার শহরের পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা নেই। অতীতে বর্ষাকালে শহরের যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা হতো এখন সেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়না বলে দাবি করেন মেযর ফজলুর রহমান।

তিনি বলেন, আমরা কোঁদালীছড়ার বহুমাত্রিক ব্যবহার করতে চাই। তাই পানি প্রবাহের পাশাপাশি এই মৌলভীবাজার শহরের বয়স্ক মানুষের হাটা চলাফেরার কোন ব্যবস্থা নেই, এমনভাবে আমরা ওয়ার্কওয়ে করব যাতে রেলিং থাকবে যেন বয়স্ক মানুষ হাটতে পারে। সৌন্দর্য বর্ধণের জন্য ফুলের বাগান থাকবে, বসার ব্যবস্থা থাকবে, সেখানে সেডও নির্মাণ করা হবে এবং টয়লেট ও বাতরুমের ব্যবস্থাও থাকবে। পুরো এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে থাকবে সিকিউরিটি ক্যামেরার পাশাপাশি থাকবে নান্দনিক আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও। সবমিলিয়ে পর্যটন আকর্ষণের জন্য একটি উপযোগী স্থান হিসেবে এই কোঁদালীছড়াকে শীঘ্রই গড়ে তোলা হবে এবং এই প্রকল্প কাজ দৃশ্যমান হবে।

মেয়র ফজলুর রহমান আরো বলেন, বুরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলে পানির সাভাবিক প্রবাহ না থাকার কারনে হাওরে কৃষি বাঁধাগ্রস্থ হয়, সেটির স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে খুব শীঘ্রই মাতারকাপন সুইচগেট থেকে ট্যানেলের মাধ্যমে বুরো মৌসুমে কোঁদালীছড়া দিয়ে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ শুরু হবে। যার কারনে মোস্তফাপুর ইউনিয়ন, গিয়াসনগর ইউনিয়ন, নাজিরাবাদ ইউনিয়ন ও কাগাবালা ইউনিয়ন হয়ে হাইলহাওর, গোফলানদীশহ আশাপাশের হাওর ও খালবিলে স্বচ্ছ পানি প্রবাহ সাভাবিক থাকবে।

(একে/এসপি/নভেম্বর ১৪, ২০২০)