ফিরোজ খান


নীলিমার সাথে পরিচয় আমার লেখালেখির শুরুতে। তখন আমি সবে লিখালিখি শুরু করি। এক হিসেবে নীলিমা আমার ফেসবুকে বন্ধু হিসেবে পরিচিত ছিল।নীলিমা প্রথমে আমার পাঠিকা ছিলো। তারপর ধীরে ধীরে মেয়েটি আমার বন্ধুত্বে পরিণত হয়। নীলিমা একটু দুষ্টু টাইপের ছিলো। সব সময়ই মজা করতো।নীলিমার সাথে প্রতিদিনই টুকটাক মেসেজ হতো। ওর মিষ্টি টোল পড়া হাসি আর দুষ্টুমি গুলোই আমার ভিতরটাকে আঁকড়ে ধরেছে। আমার স্বপ্নে মহারানীর রূপ নিয়ে আসছে। রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে।আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে।

এই সপ্তাহের শুক্রবার ওর সাথে দেখা করার কথা। ভাবতেই ঠোঁটের কোনার হাসির রেখা ফুটে উঠে। বড্ড বেশিই ভালোবাসি দুষ্টু নীলিমাকে। বিদাতা কি যে এক মায়া দিয়ে ওকে সৃষ্টি করেছে। তা কেবল তিনিই ভালো যানে৷

এই বছর কেবল ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।নীলিমাকে কখনো আমি নিজ চোখে দেখিনি। ও দেখতে কেমন? ওর হাসি কেমন? ও হাসলে ওর গালে টোল পড়ে কিনা? কিছুই জানা ছিলনা। তবে সবসময় নীল রঙের শাড়ি বেশি পড়তো পরে আমি জানতে পেরেছি ওর খুব পছন্দ ছিলো নীল শাড়ি। ওকে বলেছিলাম যেদিন আমরা দেখা করবো ও যেনো নীল শাড়ি পড়ে আমার সামনে আসে। আর আমি বলেছিলাম আমি নীল পাঞ্জাবি পড়ে আসবো। মনে মনে ভাবলাম বেশ ভালোই মানাবে দুজনকে তাই না?

অপেক্ষা করতে করতে শুক্রবার চলে এলো। সকাল বেলা চায়ের কাপ নিয়ে সোফায় উপর বসে আছি। অনেকক্ষণ ধরে নীলিমাকে ফোন দিয়ে যাচ্ছি। ওর ফোন বন্ধ ছিল। টিভিটা অন করতেই চোখের সামনে একটা ব্রেকিং নিউজ ভেসে আসে। গতকাল রাতে কিছু বখাটে ছেলে মিলে নীলিমা নামের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করেছে। নিউজটা দেখেই চোখ কপালে উঠে যায়। মনকে বুঝ দিলাম এ হয়তো অন্য কোন নীলিমা আমার ভালোবাসার নীলিমা হতে পারে না‌

ল্যাপটপ অন করে ফেসবুকে ডুকে নীলিমার আইডিতে যেয়ে দেখি কাল রাতে নীলিমা তার একটি পিক আপলোড দিয়েছে। তখনই বুঝতে পারলাম আমার নীলিমা ছাড়া আর অন্য কেউ না। ব্রেকিং নিউজে দেখা সেই নীলিমা।এভাবেই ভালোবাসার মানুষ চলে যায় ধর্ষকের ধর্ষণের শ্বিকার হয়ে।আমার ভালোবাসার নীলিমাকে আর নীল রঙের শাড়িতে দেখা হলো না।