সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার মিল্কভিটার বৃহত্তর দুগ্ধ কারখানা বাঘাবাড়ী থেকে সংগ্রহিত দুধ ঢাকায় পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। একই সঙ্গে শ্রমিকরা কারখানায় কর্মবিরতি পালন শুরু করেছে। অবৈধ ভাবে শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার প্রতিবাদে শনিবার থেকে এই ঘোষনা দেয়ার পর ঢাকায় দুধ পাঠানো বন্ধ রয়েছে। এই দাবীর সঙ্গে স্থানীয় প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সদস্যরাও একাত্বতা ঘোষনা করেছে।

মিল্কভিটার আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মিল্কভিটায় ৫৪৭ জন শ্রমিককে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এই নিয়োগ প্রদান কমিটির সভাপতি হিসেবে ছিলেন মিল্কভিটার পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনির হোসেন।

বাঘাবাড়ী কারখানায় কর্মরত শ্রমিক নেতাদের মধ্যে আব্দুল মোহন, আশরাফুল ইসলাম ও ইয়ানুর হোসেন বলেন, মিল্কভিটার বিভিন্ন কারখানায় ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে শত শত শ্রমিক দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক কাজ করে যাচ্ছেন। এদেরকে নিয়োগ না দিয়ে কর্মকর্তারা লাখ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে সদ্য অস্থায়ী ভাবে কর্মরত শ্রমিকদেরকে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দিয়েছে। যে কারনে আমাদের এই বাঘাবাড়ী কারখানা থেকে অনেক শ্রমিক নিয়োগ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এই অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে সঠিক ভাবে নিয়োগ প্রদানের দাবিতে আমরা সকাল থেকে কারখানায় কর্মবিরতি পালন শুরু করেছি। একই সঙ্গে বাঘাবাড়ী থেকে এক লিটার দুধও ঢাকায় পাঠানো হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মিল্কভিটার আওতাধীন নুকালী উত্তরপাড়া প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি মোঃ শামসুল আলম বলেন, পুরাতন শ্রমিকদেরকে নিয়োগ না দিয়ে নতুনদেরকে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিয়েছে। যে কারণে পুরানো শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে আমরা এলাকার সকল প্রাথমিক দুগ্ধ সমিতি একাত্বতা ঘোষনা করছি।

এ দিকে দুধ পাঠানো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাঘাবাড়ি কারখানায় দুধ মজুদ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে স্থানীয় ভাবেও দুধ সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ী দুগ্ধ কারখানার ব্যবস্থাপক মোঃ ইদ্রিচ আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন প্রকার মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন। বলেন, আমার পক্ষে কোন তথ্য দেয়া সম্ভব নয়।

এ বিষয়ে মিল্কভিটার পরিচালনা পরিষদের সহ-সভাপতি মোঃ শফিকুর রহমান বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় ও রেজিষ্টার বিভাগ থেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ৮৬৯ জন শ্রমিকদের মধ্যে ৫৪৭ জন শ্রমিককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাকিদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে। এতে কতিপয় শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে এই অনাকাংখিত ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমরা ঢাকায় দুধ পাঠানোর জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


(এসসি/অ/এপ্রিল ১৯, ২০১৪)