রাজন্য রুহানি, জামালপুর : জামালপুরে রবিজল পারমানিক নামে এক অন্ধ ভিক্ষুকের জমি দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ  মাহবুবুর রহমান ও স্থানীয় ভূমি অফিসের যোগসাজশে এ জমি বেদখল হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১০ টায় জামালপুর পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দুয়া গ্রামের অন্ধ ভিক্ষুক রবিজল পরামানিকের স্ত্রী আমেনা বেগম এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, আমার স্বামী একজন অন্ধ ভিক্ষুক ছিলেন। তিনি ২০১৯ সালে পরলোক গমন করেন। আমাদের একটি ছেলে দুইটি মেয়ে রয়েছে। আমার স্বামী মারা যাবার পর আমার পরিবার দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছি। পরিবারের উপার্জনক্ষম কোনো ব্যক্তি নেই। মাথা গোঁজার মতো আমাদের ক্রয়কৃত জমির উপর নির্মিত বাড়িটিই ছিল একমাত্র সম্বল। ১৯৭৩ সালে ২৯৪ দাগের কেন্দুয়া মৌজায় ১৭ শতাংশ জমি স্থানীয় মৃত মুগো মন্ডলের ছেলে আলাউদ্দিনের কাছ থেকে ৩ জন শরিকে কেনে আমার স্বামী। এখানে আমাদের জমি ৬ শতাংশ।

২০০৬ সালে আমরা জানতে পারি যে, আমাদের জমিটি খাস খতিয়ানে রয়েছে। এটি জানার পর ভূমি অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখি, কেন্দুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মাহবুবুর রহমানের ভাগ্নে মো. শাহীনূর রহমানের স্ত্রী খালেদা বেগমের নামে জমিটি লিজ দেয়া হয়েছে। পরবর্তিতে ওই জমিটি সংশোধনের জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করি। এটা জানতে পেরে কেন্দুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ মাহবুবুর রহমান ও কেন্দুয়া ভূমি অফিসের যোগসাজশে চেয়ারম্যানের ভাগ্নে শাহীনুর রহমান গংরা রাতের আঁধারে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের দখলীয় জমির দুই তৃতীয়াংশ জায়গা দখল করে নেয়।

এ নিয়ে প্রশাসনের রাজস্ব বিভাগের এডিসি ২০১১ সালে আমাদের সার্বিক দিক বিবেচনা করে ছয় শতাংশ জমি লিজ দেয়ার জন্য ডিসি ও ভূমি অফিসের কাছে একটি স্বাক্ষরিত কপিতে সুপারিশ করেন। কিন্তু পরবর্তীতে দখলবাজরা আমাদের বিরুদ্ধে উল্টো উচ্ছেদ মামলা করেন।

চেয়ারম্যানের মদদে শাহীন গংরা আমাদের বাড়িটিকে চাপাতে চাপাতে দুই থেকে আড়াই শতাংশের মতো করে ফেলেছে।

এছাড়া জামালপুর-সরিষাবাড়ী রাস্তা প্রশস্তকরণ প্রকল্পে আমাদের পুরো বাড়িটি বিলীন হয়ে যাবে। বর্তমানে বাড়ির যেটুকু জমি রয়েছে সেটুকুও নিজের বাড়ির জমি দাবি করে শাহীন গংরা রাস্তা প্রশস্তকরণের ক্ষতিপূরনের জন্য আবেদনও করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সদর আসনের সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে ভিক্ষুকের ওই জমিটুকু উদ্ধারের জন্য আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

(আরআর/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০২০)