সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) : ২৮ কিলোমিটার জুড়েই খানা খন্দকে ভরা কেন্দুয়া নেত্রকোণা সড়ক। বর্তমানে খানা খন্দকের কারণে এই সড়কের চেহারাই পাল্টে গেছে। দূর্গম এই সড়ক পথে প্রতিদিন শত শত যান বাহনে যাত্রী সাধারনেরা জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করছেন। 

নেত্রকোণা জেলা সদরের সঙ্গে কেন্দুয়া আটপাড়া ও মদন উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের চলাচলের একমাত্র সড়কপথ এটি। প্রতিদিন এই সড়ক পথেই জীবনের ঝুকি নিয়ে শত শত মানুষ চলাচল করলেও সড়কটির উন্নয়নে কর্তপক্ষ একেবারেই উদাসীন। দীর্ঘদিন ধরে নানা অযত্ন ও অবহেলার শিকার হয়ে এই সড়কটিতে স্থানে স্থানে ভাঙ্গা ও খানা খন্দকে ভরে গেছে। ফলে প্রতি নিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা, হতাহতও হচ্ছেন। তাছাড়া প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি সহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ, যারা প্রতিদিন জেলা সদরের অফিস আদালতে কর্ম সম্পাদনের জন্য চলাচল করছেন, মৃত্যু যন্ত্রনা যেন তাদের পিছু পিছু ছুটছে। এই সড়কটির সংস্কার কাজে ইতিমধ্যে অনেক অর্থ বরাদ্দ আসলেও সংস্কার কাজের জন্য নামে মাত্র কাজ দেখিয়ে বিল উত্তোলন করে টাকা হাতিয়ে নেন ঠিকাদারগণ। এর ফলে সড়কের সংস্কারের কিছুই হয়নি। এদিকে এই সড়কটি প্রসস্থকরনের মাধ্যমে উন্নয়নের জন্য প্রায় ৪শ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই বরাদ্দকৃত অর্থের এক বছর অতিবাহিত হলেও এর কাজ এখনও শুরু হয়নি।

এ প্রসঙ্গে নেত্রকোণা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হামিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বরাদ্দকৃত অর্থের অনুকুলে এই সড়কের ৩টি প্যাকেজ অনুমোদনের জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন পেলেই ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করা হবে। কবে নাগাদ শুরু হবে এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারেননি।

তবে তিনি বলেন, সড়কের ভাঙ্গাচুড়া ও খানা খন্দক ভরাট করার জন্য ম্যান্টেনেইন্স থেকে নতুন কোন বরাদ্দ না দেয়া হলেও আমাদের সাধ্যমত খানা খন্দক ভরাটের চেষ্টা করব। নেত্রকোণা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কেন্দুয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের কার্যকরী সভাপতি এডভোকেট আ ক ম বজলুর রহমান তুলিপ বলেন, আশায় বুক বেঁধে বসে আছি কবে সুন্দর সড়কে চলাচল করব। কিন্তু এখন জীবনের ঝুকি নিয়ে এই সড়কে প্রতিদিন চলাচল করতে গিয়ে শরীরে দেখা দিচ্ছে নানা ব্যাদি। আমরা বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের পক্ষে এই সড়কটির জরুরী উন্নয়ন চাই।

গত ৫ নভেম্বর কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নবাগত জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমানের সঙ্গে কেন্দুয়ার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের নেতা ও সুধিজনের সঙ্গে মতবিনময় সভায় এই সড়কের দূর্ভোগের কথা তুলে ধরেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম সহ অন্যান্য সুধিজনেরা।

এর জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, এই সড়কের প্রসস্থ করণের মাধ্যমে উন্নয়নের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। ধৈর্য্য ধরুণ সব ঠিক হবে।

এলাকার জনগণের দাবীর প্রেক্ষিতে রোববার নেত্রকোনা ৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল বলেন, এই সড়কটির উন্নয়নের জন্য একনেকে অনুমোদন হয়ে মন্ত্রনালয়ে কাজ চলছে। এটি শেষ হলেই ঠিকাদার নিয়োগ হয়ে কাজ শুরু হবে। কাজটি সুষ্ঠুভাবে শেষ হলে এই জনপথের মানুষ আগামী একশো বছর এর সুফল ভোগ করবেন।

(এসবি/এসপি/নভেম্বর ১৬, ২০২০)