স্টাফ রিপোর্টার : তদন্ত কমিটি দ্বারা অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় ভেঙে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির বর্তমান কমিটি। ২০১৯-২১ সালের অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে এই কমিটি ক্ষমতায় এসেছিলো। কমিটি বিলুপ্ত হওয়ায় সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবকে প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে জায়েদ খানের সদস্য পদ স্থগিত করার বিষয়টি অবৈধ ঘোষণা দিয়ে তাকে সাধারণ সদস্য হিসেবে তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানোতে যেন বাধা না দেওয়া হয় সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

১৬ নভেম্বর সোমবার আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতি বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর আওতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত বাণিজ্য সংগঠন। এই সংগঠনে ২০১৯-২০২১ মেয়াদী নির্বাচনের অনিয়মের বিরুদ্ধে জেড কে মুভিজের সত্ত্বাধিকারী ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান লিখিতভাবে বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের কাছে অভিযোগ করেন। মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে একজন উপসচিবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। সেই তদন্তে জায়েদ খানের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্তে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে সমিতির সভাপতি, প্রযোজক সমিতির সদ্য সাবেক সভাপতি খোরশেদ আলম খসরুসহ চারজন প্রযোজক নেতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিধি বহির্ভূতভাবে তথ্য গোপন করে গত বছরের ২৭ জুলাই অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নেন। এজন্য প্রযোজক ও পরিবেশ সমিতির কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

সমিতি সচল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খন্দকার নূরুল হককে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগে দেওয়া হয়েছে।

একইসাথে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে ওই প্রজ্ঞাপনে।

আরেকটি প্রজ্ঞাপনে চিত্রনায়ক ও জেডকে মুভিজের কর্ণধার জায়েদ খানের পদ অবৈধভাবে স্থগিত করে রেখেছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। জায়েদ খানকে স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো ও তার অভিনয়ে যেন বাধা না দেওয়া হয়, এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আইনকে পাশে রেখে যে চারজন প্রযোজক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন তারা হলেন খোরশেদ আলম খোসরু, সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, মনতাজুর রহমান আকবর, ও সদ্য প্রয়াত শরীফ উদ্দিন খান দিপু। রিট মামলা ৫৯৯/২০১৬ অনুযায়ী তাঁরা ২০১৬-২০১৮ সালের চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নির্বাচন করতে পারবেন না। রিট মামলার ৫৯৯/২০১৬ এর ২০ মার্চের আদেশে আরো দেখা যায়, খোরশেদ আলম খসরু ও মনতাজুর রহমান আকবর ৬ বছর কমিটির দায়িত্ব পালন করেন।

প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি এক নাগাড়ে ৬ বছর কমিটির দায়িত্ব পালন করেন তাহলে পরবর্তী দুই বছর তিনি আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে written pitition No 5996 of 2016 এর আদেশ অমান্য করে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন তারা। তাই এই কমিটি ভেঙে কমিটির কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে সচল রাখার জন্য খন্দকার নূরুল হককে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী ১২০ দিনের মধ্যে প্রযোজক সমিতির নির্বাচন নতুন করে অনুষ্ঠিত হতে হবে।

এদিকে কমিটি বিলুপ্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সদ্য বিদায়ী সাধারন সম্পাদক শামসুল আলম বলেন, ‘আমরা কোনো চিঠি এখনো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাইনি। চিঠি হাতে পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর অবশ্যই তা দেশে প্রচলিত সংশ্লিষ্ট আইন মেনে।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০২০)