মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার্থীদের এ্যাসাইনমেন্ট গ্রহনে তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তাদের বকেয়া বেতন ও সেশন ফি পরিশোধে বাধ্য করা হয়েছে। এতে অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। 

গত সোমবার মজিদবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ্যাসাইনমেন্টের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন অভিভাবকরা।

অভিযোগে জানা যায়, এ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ ও জমাদান বাবদ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের জন প্রতি ৭শত থেকে ৮শত টাকা নিচ্ছে। এছাড়াও খোজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৩৫জন শিক্ষার্থীর নিকট থেকে এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ ৮শত থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, বেতনের টাকা মওকুফ দিলেও এ্যাসাইনমেন্টের টাকা মওকুফ করেনি।

সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীর এক অভিভবক হুমায়ুন কবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার মেয়ের এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ ৮শত টাকা নিয়েছে। একই ভাবে উপজেলার ভয়াং শরাফতিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ছৈলাবুনিয়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-ই চলছে এ বাণিজ্য। মজিদবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট ফটোকপির জন্য নবম শ্রেনীর সাগর মাহম্মুদ এর কাজ থেকে ৮০০ টাকা, অবিভাবক জামালের ছেলে ৭ম শ্রেনীর ছাত্র ইমন ৫০০ চাইছে ৩ শো টাকা দিছেন বলে জানান।

জানা যায়, করোনা’র কারণে গত মার্চমাস থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা বিভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়নের ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের থেকে প্রশ্নপত্র ফটোকপিসহ নানা অজুহাতে বিনা রশিদে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন। এতে করোনার কারণে কর্মহীন ও স্বল্প আয়ের অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়েন।

মজিদবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশারেফ হোসেন বলেন, এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ আমার বিদ্যালয়ে কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়নি। আমার নামে শত্রুতা মূলক ভাবে অভিযোগটি দিয়েছে।

সুলতানাবাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ যে টাকা নেওয়া হয়েছে খরচের টাকা রেখে বাকি টাকা ২-১ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের ফেরৎ দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মজিদবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেয়েছি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী সাইফুদ্দীন ওয়ালীদ জানান, এ্যাসাইনমেন্ট বাবদ কোন অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। যদি কোন প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ইউজি/এসপি/নভেম্বর ১৭, ২০২০)