রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ী জেলার অধিকাংশ গ্রামীন সড়কের অবস্থা এখন চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরেছে। খানাখন্দ, বড় বড় গর্ত আার ভাঙ্গাচোড়ার কারনে  যানবাহন ও জনসাধারনের চলাচলের একেবারে দায় হয়ে পরেছে এ সড়ক গুলো দিয়ে। বেশির ভাগ সড়কের এমন বেহাল অবস্থার কারনে রাস্তার পাশ ধ্বসে গীয়ে সংকুচিত হওয়ায় যানবাহন চলতে মারাত্বক দুর্ভোগ ও দুরাবস্থা তৈরী হয়েছে। এসব রাস্তা দিয়ে ভারি যানবাহন তো দুরে থাক ছোট  হালকা কোন যানবাহন চলাচল করা এখন কঠিন । কোন কোন রাস্তায় এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মাঝে মাঝে রাস্তার গর্তে পরে যানবাহন গুলোর ঘটছে দৃর্ঘটনা। সড়কের এমন বেহাল অবস্থার দ্রুত অবসান চান ভুক্তভোগী চালক, যাত্রী ও এলাকাবাসীরা। 

রাজবাড়ীর ৫টি উপজেলার সদর উপজেলা, পাংশা , বালিয়াকান্দি,গোয়ালন্দ কালুখালী যে কোন গ্রামীন সড়কেরই এখন ভাঙ্গাচোড়া আর বড় বড় গর্ত। সদরের বেড়াডাঙ্গা হয়ে দ্বাদশী পাঁচুরিয়া, হাসপাতাল থেকে ব্রাম্মনদিয়া হয়ে খানখানাপুর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার, বেলগাছি পুরাতন বাজার থেকে গান্ধিমাড়ার প্রধান সড়ক পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, কাটাখালী থেকে খানখানাপুর পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার, চন্দনী থেকে মদাপুর মৃগী পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার, পাংশার আজিজ সরদারের বাস স্ট্যান্ড থেকে বাহাদুর পর ১৩ কিলোমিটার, দরগাতলা থেকে যশাই পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার, পাংশা রেলগেট থেকে নাদুরিয়া ঘাট পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার এবং পাংশা উপজেলা থেকে কালুখালী পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার এ রাস্তা, দেবগ্রাম পদ্মা পার হয়ে দৌলতদিয়া ক্যানেল ঘাটের রাস্তা গুলো খানাখন্দ আর ভাঙ্গা চোড়ার কারনে ভালোভাবে কোন যানবাহনই চলাচল করতে পারছেনা। পাংশার প্রায় সবগুলো সড়কই এখন খানাখন্দে ভরপুর।বালিয়াকান্দির রাস্তাগুলো একই অবস্থা চলাচলের উপযোগী নেই কোন রাস্তা। জেলার ৪২টি ইউনিয়নের বেশির ভাগ রাস্তার অবস্থাই এখন চলাচলের অনুপোযোগী। বেশির ভাগ রাস্তা গুলোতে বৃষ্টির পানিতে কাদায় আর পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। বোঝার উপায় থাকেনা এ রাস্তা গুলো আদো পাকা না কাঁচা। অনেক রাস্তাই এখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

এ সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই এখন পিচ উঠে গীয়ে স্থানে স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহন ও জনসাধারনের চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পরেছে গ্রামীন সড়কের এই রাস্তা গুলো দিয়ে। কোন কোন সড়কে আবার এ্যাত বড় বড় গর্তেও সৃষ্টি হয়েছে যে সেখান দিয়ে কোন যানবাহতো দুরে থাক সাধারন মানুষ হেটেই চলাচল করতে পারছেনা। দুর্ভোগ আর ভোগান্তির মাত্রা ছাড়িয়েছে বহু দিন আগে থেকেই। ইচ্ছে করলেই স্বাধীন ও স্বাভাবিক ভাবে যে কোন স্থানে আসা যাওয়া এখন বড় ধরনের সমস্যায় পরিনত হয়েছে। এ সড়ক গুলোর স্থানে স্থানে ভাঙ্গা চোড়া আর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মারাত্বক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে ভুক্তভোগী জনগণ, যানবাহন চালক ও এলাকাবাসি । এমন পরিস্থিতিতে মালামাল পরিবহন তো দুরের কথা সাধারন মানুষ ও ছোট ছোট যানবাহন চলাচলই হয়ে পরেছে দুরুহ। অসুস্থ্য রোগীদের দুরের কোন হাসপাতালে নিতে পড়তে হয় বড় ধরনের সমস্যায়।

গ্রামীন সড়ক গুলো ভাঙ্গা চোড়া আর বড় বড় গর্তের কারনে এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে স্বাভাবিক ভাবে এ রাস্তা গুলোতে যানবাহন তো দুরের কথা সাধারন মানুষ হেটেও চলাচল করতে পারছেনা। আর কোন মানুষ যদি অসুস্থ্য হয় তাহলে চিকিৎসা করতে হাসপাতালে যাওয়া আসা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে পরেছে। মাঝে মাঝে এই গর্তগুলোতে যানবাহন আটকে ও উল্টে পরে যাত্রী ও চালকেরা মামাল নিয়ে মারাত্বক সমস্যায় পড়তে হয়। গর্তে পড়ে যানবাহন ভেঙ্গে তারা আর্থিক ক্ষতির মধ্যে পরেন। তাই অচিরেই এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে রাস্তাগুলোকে দ্রুত নির্মান ও মেরামত করার অনুরোধ জানান ভুক্তভোগীরা।

বিমল কুমার দাস-নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি রাজবাড়ী তিনি বলেন, প্রতিবছরই এলজিইডির ভাঙ্গাচোড়া সড়কগুলো যানচলাচলের উপযোগী রাখতে মেরামত করা হয় । কিছু কিছু পুরাতন রাস্তা যেগুলো অর্থের অভাবে মেরাতম রাখতে পারেননি। ইতমধ্যে এ রাস্তা গুলো সংস্কার করতে (আরসিআইপি) প্রকল্পের মাধ্যমে টেন্ডার আহবান করেছেন এবং চুক্তি হয়েছে। সদর উপজেলা সহ বালিয়াকান্দি ও পাংশায় রাস্তা পূন নির্মান কাজ শুরু করা হয়েছে। আশা করছেন অধিকাংশ রাস্তার খানাখন্দ মেরামত করতে সক্ষম হবেন। জেলার গ্রামীন সড়কের চলাচলের অনুপোযোগী মোট ৫০ কিলোমিটারের মত রাস্তায় খানাখন্দ ও ভাঙ্গাচোড়া রয়েছে । এ সড়ক গুলোও এ অর্থ বছর মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করতে সক্ষম হবেন। রাজবাড়ীতে এলজিইডি’র আওতায় ৩৫৯৫ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে ১৪৬৮ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে পাকা। আর কাচা রাস্তা রয়েছে ২১২৬ কিলোমিটার।

(একেএ/এসপি/নভেম্বর ১৮, ২০২০)