সিনিয়র রিপোর্টার : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে প্রসিকিউশিনের যুক্তি উপস্থাপন দ্বিতীয় দিনের মতো শেষ হয়েছে।

সোমবার থেকে (আর্গুমেন্ট) যুক্তি খণ্ডন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার মামলায় ৬ অভিযোগের প্রথম অভিযোগ বিষয়ে সাক্ষী সংক্রান্ত যুক্তি তুলে ধরেন।

মামলার চতুর্থ সাক্ষী মেছের উদ্দিন, অস্টম মুজিবুর রহমান মাস্টার, ১৩তম রোতিশ চন্দ্র ভৌমিক, ১৬তম মোয়াজ্জেম আলী ও ১৭তম সাক্ষী তাপস কুমার অধিকারীর জবানবন্দির বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন প্রসিকিউটর তাপস কান্তি বল।

মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজহারের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করার পরে মামলার কার্যক্রম বুধবার পর্যন্ত মুলতবি করেন।

মঙ্গলবার আজহারুল ইসলামের মামলায় যুক্তি খণ্ডন করার সময় রাষ্ট্রপক্ষে চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর আলতাফ উদ্দিন আহম্মদ, সুলতান মাহমুদ সীমন, জাহিদ ইমাম, রিজিয়িা পারভীন চমন ও শেখ মুসফিক কবীর উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে কায়সারের পক্ষে ছিলেন শিশির মো. মনির, মো. রায়হানুল ইসলাম ও মো. শাহিনুর ইসলাম।

এর আগে ১৮ আগস্ট চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু আজহারের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। পরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য ও আজহারুল ইসলামের অপরাধ বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন জেয়াদ আল মালুম।

গত ৪ আগস্ট আজহারের বিরুদ্ধে ‍যুক্তি উপস্থাপনের জন্য এদিন ধার্য করে আদেশ দেন। গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে আজহারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সর্বমোট ১৯ জন প্রসিকিউশনের সাক্ষী তাদের জবানবন্দি পেশ করেন।

একই বছরের ১২ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের ৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করে ট্রাইব্যুনাল-১।

এসব অভিযোগে তদন্তকালে ৬০ জনেরও বেশি ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এ মামলাটি তদন্ত করেন তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তা (আইও) এস এম ইদ্রিস আলী।

প্রসিকিউশনের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের স্বার্থে ২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আজহারকে সেফহোমে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

২০১৩ সালের ১৮ জুলাই আজহারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়।

৬টি অভিযোগের ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হয়েছে। মোট ৪টি ভলিউমে ৩০০ পৃষ্ঠার নথিপত্র দাখিল করা হয়।

এর আগে গত বছরের ৪ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের ৯ ধরনের অভিযোগে তদন্ত শেষ করে তদন্ত সংস্থা প্রসিকিউশন বরাবর তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে।

জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২২৫ ব্যক্তিকে গণহত্যা, ৪ জনকে হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক ও ১৩ জনকে নির্যাতন করা এবং শত শত বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের আদেশে রাজধানীর মগবাজারের নিজ বাসা থেকে ২০১২ সালের ২২ আগস্ট আজহারকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ১৯, ২০১৪)