স্পোর্টস ডেস্ক : এখনও পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হয়নি তার। তবে আলো ছড়িয়েছেন সবশেষ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ক্রিকেটে। টানা ইয়র্কার দিতে পারার অসামান্য প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন নিয়মিত। যে কারণে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২৯ বছর বয়সী বাঁহাতি পেসারের দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছেন ভিভিএস লক্ষ্মণ।

বলা হচ্ছে, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বাঁহাতি পেসার থাঙ্গারাসু নাটরাজনের কথা। যিনি সবশেষ আইপিএলে ইয়র্কারে কাবু করেছেন বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানদের। বিশেষ করে ডেথ ওভারে একের পর এক ইয়র্কার দিয়ে নজর কেড়েছেন ক্রিকেট বিশ্বের। এর পুরস্কার হিসেবে ভারতের অস্ট্রেলিয়া সফরের টি-টোয়েন্টি দলের সঙ্গী করা হয়েছে নাটরজনকে।

তবে হায়দরাবাদের নাটরাজনের মেন্টর ভিভিএস লক্ষ্মণ দেখছেন আরও বড় সম্ভাবনা। তার মতে, আগামী বছর ঘরের মাঠে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বোলিং লাইনআপের এক্স-ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছেন তামিল নাড়ুর সালেম শহরের পেসার নাটরাজন। এর পেছনে ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যাটাও বেশ জোরালো দিয়েছেন লক্ষ্মণ।

দ্য হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাৎকারে লক্ষ্মণ বলেছেন, ‘আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা মাথায় রাখলে, আপনি যদি ভারতীয় দলের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন যে তাদের একজন ভাল ডেথ বোলার প্রয়োজন। মোহাম্মদ শামি এবং নবদ্বীপ সাইনিরা ডেথে ভাল করছে, এটা দলের জন্য ভাল। এদের সঙ্গে বাঁহাতি হওয়ায় নাটরাজন হতে পারে এক্স-ফ্যাক্টর।।’

আইপিএলের ২০১৯ সালের আসরেও হায়দরাবাদ স্কোয়াডে ছিলেন নাটরাজন। কিন্তু সুযোগ পাননি এক ম্যাচেও। সেখান থেকে ২০২০ সালের আইপিএল শেষে জায়গা পেয়ে গেছেন ভারতীয় দলে। হায়দরাবাদের হয়ে খেলার সময় তিনি পরিকল্পনা সাজিয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নারের সঙ্গে। এবার অসি সফরে পরিকল্পনা আঁটবেন ওয়ার্নারকে আউট করতে।

সবমিলিয়ে নাটরাজনের যাত্রাটা বেশ রোমাঞ্চকর। এবারের আইপিএলে তাকে ঘিরে এত আলোচনার বড় কারণ টানা ব্লকহোল তথা ইয়র্কার লেন্থে বোলিং করতে পারার ক্ষমতা। ক্রিকইনফোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এবারের আইপিএলে ৭১টি ইয়র্কার করেছেন নাটরাজন। যেখানে তালিকার দুইয়ে থাকা কার্তিক ত্যাগির ইয়র্কার সংখ্যা ছিল মাত্র ২৮টি।

ইয়র্কার দিতে পারার অসামান্য ক্ষমতার কারণে এবারের আইপিএলে হায়দরাবাদের ডেথ ওভারের অন্যতম ভরসার পাত্র ছিলেন নাটরাজন। পুরো আসরে তিনি করেছেন মোট ৬২.৫ ওভার বোলিং করেছেন তিনি, যেখানে ডেথ তথা শেষ ওভারের মধ্যেই করতে হয়েছে ১৩১ বল (২১.৫)। পুরো আসরে ৮.০২ ইকোনমিতে ১৬ উইকেট শিকার করেছেন নাটরাজন।

নাটরাজনকে দলে সুযোগ দেয়ার কারণ হিসেবে লক্ষ্মণ বলেন, ‘আরব আমিরাতে আইপিএল শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচ থেকেই দুর্দান্ত বোলিং করছিল নাটরাজন। একদম শুরু থেকেই যে আত্মবিশ্বাস সে দেখিয়েছে, সত্যিই অসাধারণ। মূলত এ কারণেই ভুবনেশ্বরের ইনজুরির পর আমরা খলিল আহমেদের বদলে তাকে সুযোগ দিয়েছি।’

লক্ষ্মণ জানালেন, শুধু ইয়র্কার নয়, নাটরাজনের ভাণ্ডারে রয়েছে আরও অনেক অস্ত্র, ‘তামিল নাড়ু প্রিমিয়ার লিগ থেকে সবাই নাটরাজনকে ইয়র্কার বিশেষজ্ঞ হিসেবেই চেনে। তবে আমার বলতেই হবে যে তার বোলিংয়ে অনেক বৈচিত্র রয়েছে। নিখুঁত বাউন্সার করতে পারে, স্লোয়ার দিতে পারে, অফকাটার রয়েছে, নতুন বলে উইকেট নেয়ার সামর্থ্যও রয়েছে তার।’

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ১৯, ২০২০)