মাদারীপুর প্রতিনিধি : রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে ঢুকতে দেখা যায় ময়লার স্তুপ। হাসপাতাল, প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক ভবন সর্বত্রই ময়লার ছড়াছড়ি। নোংরা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নাক চেপে ঢুকতে হয় । অতি সম্প্রতি ৫০ শয্যায় উন্নত হলেও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের যেন উন্নতি হবার নেই। এমনই অভিযোগ রোগীদের।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক রোগী জানান, প্রতিদিন সুইপার এলেও জরুরী বিভাগের সামনে, ডাক্তারের চেম্বার, নার্স রুম পরিস্কার করে চলে যায়। পুরুষ ওয়ার্ড কিংবা মহিলা ওয়ার্ড ঝাড় দেয়া হলেও বাথরুম পরিস্কারসহ অন্যন্যা জায়গা পরিস্কার বা ঝাড় দেয়া হয়না। ফলে দুগন্ধ লেগেই থাকে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দিলীপ বাবুর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, নিয়মানুযায়ী ৫০ শয্যা হাসপাতালে ৮ জন সুইপার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৫ জন। তাও আবার ১ জনকে ডেপুটেশনে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে। লোকবল কম থাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রক্ষা দুস্কর হয়ে পড়েছে। তাছাড়া শিফটিং এর মুহুর্তে ১ জন করে যাবে আরেকজন যোগ দেবে এমন মার্জিন সময়ে ময়লা আবর্জনা চোখে পরতে পারে। লোকবল হিসেবে হাসপাতাল ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন যথা সম্ভব চেষ্টা করা হয়ে থাকে।
দোতলায় পুরুষ ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, আবর্জনা তো আছেই। তার উপরে ভ্যাপসা গরম। রোগীরা কেউ হাতপাখা নাড়ছে, কেউ গামছা জড়িয়ে কাপড় দিয়ে বাতাস নেবার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তিন সপ্তাহ ধরে ভর্তি হওয়া এক রোগী জানালো ৫/৬ দিন ধরে এ ওয়ার্ডে তিনটি ফ্যান অঁচল। এটি সচল করার কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। ২ দিন পরপর রোগীর বিছানা বদলানোর কথা থাকলেও ৫/৬ দিনেও কারো কারো ভাগ্যে ধোয়া বিছানা জোটেনা।
পাশেই মহিলা ওয়ার্ড। জবু থবু ভাবে শুয়ে আছে রোগী। গরমে ভিজে জবজবে। মাথার উপর ফ্যান আছে। কিন্তু সার্ভিসিংয়ের অভাবে ফ্যানগুলো চলতে পারছেনা। কয়েকদিন ধরে এ ওয়ার্ডের ৩টি ফ্যান অচল। এ ব্যাপারে এক রোগীর আত্মীয় জানালো ফ্যান চালু করার ব্যাপারে নার্সদের সাথে আলাপ করলে তারা ডাক্তারদের কাছে অভিযোগ করার পরামর্শ দেয়। আর ডাক্তাররা রাউন্ডে এসে এমন ব্যস্ততা দেখায় যে, তাদের সাথে কথা বলার সুযোগটুকু পাওয়া যায়না। রোগীদের এ ভোগান্তির শেষ কোথায়?
এ ব্যাপারে ডিউটিরত নার্সদের সাথে কথা বলতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি।
আবাসিক মেডিকেল অফিসারদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করতে গেলে তার কোন উত্তর পাওয়া যায়নি। এ প্রেক্ষিতে জনমনে জিজ্ঞাসা হাসপাতালের চরম দশার ইতি ঘটবে কবে?
(এএসএ/এএস/আগস্ট ১৯, ২০১৪)