স্টাফ রিপোর্টার : তিন হাসপাতালে ঘুরে জমজ নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানির জন্য চিকিৎসা ও আইন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

নিয়োগ পাওয়া অ্যামিকাস কিউরিরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না, মনজিল মোরসেদ ও শাহদীন মালিক এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন জ্যেষ্ঠ শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

তিন হাসপাতালের ব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন দাখিলে পর বুধবার (২৫ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালকুদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৮ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

এর আগে আদালতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), ঢাকা শিশু হাসপাতাল এবং মুগদার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের পক্ষে ব্যাখ্যা হাইকোর্টে দাখিল করা হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, মুগদার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্টের পক্ষে আইনজীবী আব্দুল খালেক, শিশু হাসপাতালের পরিচালক ও উপপরিচালককের পক্ষে আইনজীবী মাহবুব শফিক এবং বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের উপপরিচালকের পক্ষে আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম এসব প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন।

এর আগে এ ঘটনায় গত ২ নভেম্বর তিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যাখা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। মৃত জমজ সন্তানদের মরদেহ আদালত চত্বরে নিয়ে আসেন তাদের বাবা সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস মো. আবুল কালাম আজাদ। এরপর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুলসহ ওই আদেশ দেন। রুলে চিকিৎসা অবহেলায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে চান হাইকোর্ট।

একেএম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এমএলএসএস আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী সায়েরা খাতুন অসুস্থ বোধ করলে হাসপাতালে নেয়ার পথে সিএনজির মধ্যে ২টি সন্তান প্রসব করেন। এ সময় তারা প্রসূতিকে মুগদা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করেন। এই হাসপাতালে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। চিকিৎসকরা নবজাতকদের শ্যামলীতে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিতে বলেন। পরে দুই নবজাতককে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশু হাসপাতালে নিয়ে যায়।

শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের আইসিইউ বেড খালি নেই। সাধারণ বেডে ভর্তি করতে হবে। এ জন্য দিনে প্রতি বাচ্চার জন্য ৫ হাজার করে টাকা লাগবে। এ সময় আবুল কালাম আজাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতির সঙ্গে আলাপ করেন। বিচারপতি তার নবজাতকদের বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে আসতে বলেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নিয়ে আসেন এবং পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন।

কিন্তু পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানান, পরিচালক মিটিংয়ে আছেন। পরে জানান, পরিচালক বাসায় চলে গেছেন। এরপর পরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা একজন ডাক্তারকে দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে নবজাতকদের দেখান। তখন ডাক্তার বলেন, জমজ নবজাতক আর বেঁচে নেই। তারপর আবুল কালাম আজাদ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের মরদেহ আদালত চত্বরে নিয়ে আসেন। এরপর আদালত আদেশ দেন বলে জানান আমিন উদ্দিন মানিক।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ২৫, ২০২০)