আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বিলাতি গাব। নামে বিলাতি হলেও গ্রাম বাঙলার আনাচে-কানাচে সিঁদুর মাখা রঙের মতো এ ফলটির বিস্তার চোখে পড়ার মতো। কোন ধরনের যত্ন ছাড়াই অবহেলায় বেড়ে ওঠে বিলাতি গাব। এ ফলে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও আয়রণ। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য এ গাবের রয়েছে বিশেষ কার্যক্ষমতা।

বরিশালের হাট-বাজারে সাধারনত আষাঢ়, শ্রাবন ও ভাদ্র মাস জুড়েই সিঁদুর মাখা বিলাতি গাবের প্রচুর দেখা মেলে। কোন ধরনের পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে ওঠা, দামে সস্তা, কেমিক্যাল মুক্ত, স্বাদ ও গন্ধে মুগ্ধ সুস্বাদু বরিশালের বিলাতি গাব দীর্ঘদিন থেকে রপ্তানি হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। বরিশালের চরকাউয়া, চন্দ্রমোহন, টুঙ্গিবাড়িয়া, চাঁদপুরা ও দিনারের পোল এলাকায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বসেছে গাবের হাট। পাইকারী ব্যবসায়ি বজলু মিয়া জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ২’শ গাবের ঝুঁড়ি ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে। তিনি আরো জানান, বরিশালে উৎপাদিত বিলাতি গাবের বাজার সীমিত হওয়ায় সঠিক ভাবে তারা বাজার মূল্য পাচ্ছেন না। অথচ গ্রাম বাঙলার অবহেলার সস্তার গাব ঢাকায় এসে দুর্মূল্য হয়ে দাঁড়ায়। স্থানীয় পর্যায়ে গাব সংগ্রহকারী ব্যবসায়ীরা ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে এক কুড়ি (২০ টিতে এক কুড়ি) গাব ক্রয় করেন। এক হাত ঘুরে ৬৫০ থেকে ৭০০ গাব ভর্তি প্রতিটি ঝুঁড়ি ঢাকায় যায় ১১ থেকে ১২’শ টাকা দরে। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি গাবের হালি (চারটি) বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। বরিশালের গাবের ব্যবসায়িরা জানান, এবারও বিলাতি গাবের ফলন ভালো হওয়া সত্বেও ঢাকার আড়তদাররা সঠিক ভাবে দাম না দেয়ায় অনেক সময় তাদের লোকসান গুনতে হয়। আড়ৎদারদের মর্জি মাফিক ব্যবসা চালাতে গিয়ে ঢাকার আড়ৎদাররা আর্থিক ভাবে লাভবান হলেও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা নায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গাব ব্যবসায়ি সুলতান মিয়া জানান, পর্যাপ্ত পরিমানে গাবের হাট না থাকায় অনেক সময় তাদের দাম নিয়ে চিন্তিত হতে হয়। আর এ কারণেই দেশীয় এ ফলটির উৎপাদকেরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
(টিবি/এএস/আগস্ট ১৯, ২০১৪)