শেরপুর প্রতিনিধি : শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচন ফের স্থগিত হয়েছে। সীমানা জটিলতা ও ভোটার তালিকা ত্রুটি সংক্রান্ত হাইকোর্টে এক রীট আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিলেট ডিভিশন ১৯ আগস্ট মঙ্গলবার এ নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ জারী করেছে। কিন্তু আগামী ১১ সেপ্টেম্বর রীট আবেদনটির শুনানীর জন্য পরবর্তী তারিখ ধার্য থাকায় এ স্থগিতাদেশ প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, ভোট গ্রহনের মাত্র ১১ দিন আগে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার সংবাদ শেরপুরে পৌঁছার সাথে সাথে বিভিন্ন প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দারুন হতাশা নেমে এসেছে। মঙ্গলবার কোন প্রার্থীর পক্ষে কোনপ্রকার প্রচার-প্রচারনাও দেখা যায়নি। তবে এদিন নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি মানুষের মুখে মুখে ফিরতে থাকে। ‘টক অব দ্যা টাউনে’ পরিণত হয় বিষয়টি। উল্লেখ্য, আগামী ৩১ আগস্ট শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হায়দর আলী ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানের সাথে পৃথক পৃথকভাবে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, উচ্চ আদালতে নির্বাচনে পুন:স্থগিতের কথা শুনেছি। কিন্তু অফিসিয়ালি এখনও কিছু পাইনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চতুর্থ ধাপে গত ২৩ মার্চ শেরপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জামালপুর জেলা সদরের সাথে সীমানা জটিলতা ও ভোটার তালিকা ত্রুটি সংক্রান্ত জটিলতার অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিলের স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্ট আবেদন করেছিলেন শেরপুর সদর উপজেলার কুলুরচর এলাকার আলমগীর হোসেনসহ ৪ ব্যাক্তি। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারী হাইকোর্টের বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার ও বিচারপতি মাহমুদ খুরশিদ আলমের বেঞ্চ ৪ মাসের জন্য এ নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ জারী করেছিল। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলে আইনী জটিলতা মুক্ত হওয়ায় নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনের পুণ:তফসিল ঘোষনা করেছিল। সেই অনুযায়ী চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রতিক পেয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছিল। কিন্ত ভোট গ্রহণের মাত্র ১১ দিন আগেএফর নির্বাচন স্থগিতের ফলে তাদের মধ্যে দারুণ হতাশা নেমে আসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সীমানা জটিলতা ও ভোটার তালিকা ক্রটি সংক্রান্ত হাইকোর্টের রীট আবেদনটির ওপর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর শুনানীর জন্য তারিখ ধার্য্য রয়েছে। কিন্তু সেটি চুড়ান্ত নিস্পত্তির আগেই রাষ্ট্রপক্ষের সাথে চেয়ারম্যান প্রার্থী আ’লীগ নেতা ছানোয়ার হোসেন ছানু পক্ষভুক্ত হয়ে নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলে আপিলেট ডিভিশনে সেই আদেশের বিপক্ষে আবেদন করেন সংক্ষুদ্ধরা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৩১ আগস্টের নির্বাচনের ওপর ফের স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, মঙ্গলবার দুপুর থেকেই শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন ছানু এবং জাতীয় পার্টি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ইলিয়াছ উদ্দিন নির্বাচন স্থগিতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, উচ্চ আদালত নির্বাচনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর রীট মামলাটির শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং অফিসার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হায়দর আলী ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমানের সাথে পৃথক পৃথকভাবে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, উচ্চ আদালতে নির্বাচনে পুন:স্থগিতের কথা শুনেছি। কিন্তু অফিসিয়ালি এখনও কিছু পাইনি।
(এইচবি/এএস/আগস্ট ১৯, ২০১৪)