চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জমিতে সার দেবার জন্য দোকানে দোকানে ইউরিয়া সারের জন্য ধর্ণা দিচ্ছে। কিন্তু কোন কারখানার সার কিনবেন তা নিয়ে পরেছেন রীতিমতো বিপাকে। গত সপ্তাহে ‘ইম্পোর্ট’  ইউরিয়া সার কিনে ২ বিঘা জমিতে দিয়েছেন। এতে দৃশ্যত কোন ফল পাননি তিনি। বরং ধান গাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করেছে।

সারের ডিলাররা তাঁকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন- ইম্পোর্ট সার ছাড়া দেশীয় কারখানার ইউরিয়া সার মার্কেট আউট। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় নতুন বাজার খেয়াঘাটে একটি সারের দোকানে আলাপচারিতায় এমন কথাই জানান তিনি। মোহাম্মদ আলীর বাড়ি চাটমোহরের কুমারগাড়া গ্রামে। তিনি বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তার মতো ইউরিয়া সার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার রোপা আমন চাষীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছর উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৪ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে। উপজেলায় সারের কোন ঘাটতি না থাকলেও দেশীয় কারখানার সার সংকট রয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা সারে গুনগত মানের হেরফের রয়েছে। এ দায়িত্ব কৃষি মন্ত্রণালয়ের। সারের ডিলাররা জানিয়েছেন, যমুনা সার কারখানায় প্রস্তুতকৃত সারের উপর কৃষকের আস্তা বেশি। কিন্তু বর্তমানে বাফার গুদামে এ সার পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি উপজেলা কৃষি দপ্তরকে জানিয়েও কোন প্রতিকার মিলছে না।

ডিলাররা আরো জানায়, ইম্পোর্ট করা ইউরিয়া সারের নাম হলো ‘গ্রানুলার ইউরিয়া’ চায়নার লাইন ইয়ংগাং হাওয়াই এগ্রিকালচার ট্রুলার মিনস অব প্রোডাকশন কোং লি: এ সার রপ্তানি করছে। কৃষকদের কাছে এটাই ‘ইম্পোর্ট’ সার নামে পরিচিত। ডিলারদের অভিযোগ, বাফার গুদামে (বাঘাবাড়ি) আকাশের নিচে খোলা অবস্থায় বস্তা বস্তা সার পরে রয়েছে। এতে সার দলা (জমাট) বেধে যাচ্ছে।

অথচ সংশ্লিষ্টদের এব্যাপারে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। ডিলারদের দেওয়া তথ্যমতে, প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টিএসপি বস্তা প্রতি ১ হাজার ১শ’ টাকা, পটাশ ৭শ’ ২০ টাকা ও ডিএফপি সার ১ হাজার ৩শ’৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি সার থাকে। বাফার গুদাম থেকে আনা সারের অনেক বস্তায় নির্ধারিত পরিমাণ (২/৩ কেজি কম থাকে) সার পাওয়া যায় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন, ধানের গাছ হলুদ হয়ে যাচ্ছে এটা সঠিক না। তবে ইম্পোর্ট সারে গুনগত মানের অভাব থাকতে পারে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। দেশীয় কারখানার সারের সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, মন্ত্রণালয় থেকেই এসব সার আমদানি করা হচ্ছে।

(এসএইচএম/এটিআর/আগস্ট ১৯, ২০১৪)