স্টাফ রিপোর্টার : নদীভাঙন রোধ করতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে বালুমহাল ও ঠিকাদারদের তালিকা করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতে অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন বন্ধ হবে এবং তালিকার বাইরে ও বালুর পরিমাণের বাইরে কেউ বালু তুলতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বালুমহালগুলোর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (৩০ নভেম্বর) ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব একথা জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা আলোচনা করতে গিয়ে বালুমহালগুলোর বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বালুমহালগুলো যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, নদীভাঙনের বড় কারণ হবে। এটা নিয়ে আমরা গত ৩/৪ মাস ধরে কেবিনেটে আন্তঃমন্ত্রণালয় অনেকগুলো মিটিং করে ফেলেছি। আমরা প্রিসাইজ করেও দিয়েছি যে এখন থেকে বালুমহাল কীভাবে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ভূমিসচিবকে সভাপতি করে একটি কমিটি গঠন করে গাইডলাইনও দিয়ে দিয়েছি যে কীভাবে নীতিমালা হবে। আশা করি জানুয়ারির মধ্যে নীতিমালা হয়ে যাবে।

‘একটা ফান্ডামেন্টাল গাইডলাইন হলো- পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে বালুমহাল সার্ভে করে কোয়ানটিটি নির্ধারণ করে দেবেন। সার্ভে হয়ে গেলে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএর টেকনিক্যাল মতামত নিয়ে জেলা প্রশাসকেরা বালুমহালগুলো ডিক্লারেশন দেবেন এবং ম্যাপসহ ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবেন। জেলা প্রশাসক ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকবে। ’

তিনি বলেন, দরপত্র আহ্বান করে কন্ট্রাকটরদের তালিকাও ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীসময়ে দরপত্র আহ্বান করে কতটুকু বালু নিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেবে। তালিকার বাইরে ও বালুর পরিমাণের বাইরে কেউ বালু তুলতে পারবেন না। এতে একটা সিস্টেমের মধ্যে চলে আসবে এবং বৈষম্যমূলকভাবে বালু উত্তোলন আশা করি আমরা খুব শিগগিরই বন্ধ করে দিতে পারবো।

সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন ও ওয়েবসাইটে বালুমহাল এবং বালুর পরিমাণ ও কন্ট্রাকটরদের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বালুর পরিমাণ নির্ধারণের জন্য মাল্টিবিম সার্ভে করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এতদিনতো আমাদের সিঙ্গেল বিম ছিল, পুরো জিনিসটা আসতো না। আমরা পদ্মাতে একটা লঞ্চ নিয়ে এসেছি ইংল্যান্ড থেকে মাল্টিবিমের জন্য। ৩০ মিটার পর্যন্ত বালু ফেললে প্রি-ওয়ার্ক মেজারমেন্ট ও পোস্ট ওয়ার্ক মেজারমেন্ট থাকবে। এক সেন্টিমিটার ফেললেও আসবে স্ক্রিনে। পদ্মাতে যে আমরা বস্তা-পাথর ফেলি এর জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটিএ ওই মাল্টিবিম দিয়ে সার্ভে করে দেবে। তারা প্রিসাইজলি বলে দিতে পারবে।

আশা করি একটা বড় পরিবর্তন হবে আমাদের ম্যানেজমেন্টে, বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ব-দ্বীপ পরিকল্পনা সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরা হয়েছে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২০১৮ সালে অনুমোদন করা হয়। আজ বিস্তারিত উপস্থাপনার পর কিছু নির্দেশনা আছে। এটাকে আর একটু মোডিফিকেশন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের মিটিংয়ে দরকার পড়লে কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা। এটা ২০২১ সাল পর্যন্ত একটা পরিকল্পনা। এখানে ফ্লেক্সিবিলিটি থাকবে। কারণ, নতুন নতুন বিষয় আসবে।

(ওএস/এসপি/নভেম্বর ৩০, ২০২০)