আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে গিয়ে শুরু থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি যেসব অভিযোগ তুলেছেন সে সব বিষয়ে কোন প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান আইন প্রয়োগকারী এই কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা এমন কোনো জালিয়াতির প্রমাণ দেখতে পাইনি যা নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে।

পরাজয় স্বীকার না করা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য তার এই অবস্থানকে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ একদিকে যখন জো বাইডেনের বিজয়ের ফলাফলের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে, একই সময়ে পরাজিত হওয়া রাজ্যগুলোয় একের পর এক মামলা করে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জো বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি। আর জনগণের ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে ৬২ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন বাইডেন।

তবে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই একের পর পর এক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে, উইলিয়াম বার ভোট জালিয়াতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেওয়ার পরও ট্রাম্প কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই টুইটারে আবারও ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন।

নির্বাচন নিয়ে একটি দাবি করা হয়েছে যে, ভোটিং মেশিনগুলো হ্যাক করে এমনভাবে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে যে, সেটি ভোটের ফলাফল পাল্টে জো বাইডেনের পক্ষে নিয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে এই দাবির প্রসঙ্গে উইলিয়াম বার বলেছেন, বিচার বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এই দাবি তদন্ত করে এখন পর্যন্ত এর সপক্ষে কোন প্রমাণ খুঁজে পায়নি।

গত মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখার জন্য তিনি নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে সব কিছু সমাধানের একটি মাধ্যম হিসাবে ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। কেউ যদি কিছু পছন্দ না করে, তখন তারা চায় যে, বিচার বিভাগ এসে সেটার তদন্ত করতে শুরু করুক। উইলিয়াম বারকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব বলে মনে করা হয়।

তার এই মন্তব্যের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি এবং জেনা এলিস একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, 'অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, অনিয়মের এবং পদ্ধতিগত জালিয়াতির যথেষ্ট প্রমাণের ব্যাপারে সেটা নিয়ে তদন্ত বা জ্ঞান ছাড়াই তিনি মতামত দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।

উইলিয়াম বারের এই মন্তব্যের পর সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেছেন, আমার ধারণা, এরপরে তিনিই হয়তো বরখাস্ত হতে চলেছেন। এর আগে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে 'অত্যন্ত ভুল' মন্তব্য করার জন্য সাইবার সিকিউরিটি এবং ইনফ্রাসট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিসা) প্রধান ক্রিস ক্রেবসকে বরখাস্ত করেন ট্রাম্প।

ক্রেবস এক টুইটা বার্তায় বলেছিলেন, নির্বাচনী পদ্ধতি জালিয়াতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ৫৯ জন নির্বাচনী নিরাপত্তা কর্মকর্তা একমত হয়েছেন যে, কোন ঘটনাতেই এরকম অভিযোগের ভিত্তি নেই এবং প্রযুক্তিগতভাবেও সেটা সম্ভব নয়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০২, ২০২০)