আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা সামলে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ব্রাজিলের অর্থনীতি। বছরের প্রথম ছয় মাসে চরম অবনতি হলেও তৃতীয় প্রান্তিকে এসে তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ শতাংশের কাছাকাছি। অবশ্য দেশটির অর্থনীতিবিদরা এরচেয়েও বেশি উন্নতি আশা করেছিলেন।

ব্রাজিলের রাষ্ট্রপরিচালিত ভূগোল ও পরিসংখ্যান ইনস্টিটিউটের (আইবিজিই) সবশেষ তথ্যমতে, ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির অর্থনীতির আকার বেড়েছে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ১৯৯৬ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ ত্রৈমাসিক প্রবৃদ্ধি।

২০১৯ সালের শেষ তিন মাসের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ব্রাজিলের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছিল ১ দশমিক ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে রীতিমতো ধস নামে দেশটির অর্থনীতিতে। এপ্রিল থেকে জুনে তাদের অর্থনৈতিক সংকোচন হয় রেকর্ড ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে তৃতীয় প্রান্তিকে আর নেতিবাচক নয়, ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিই হয়েছে রেকর্ড পরিমাণে।

আইবিজিই জানিয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বরের তুলনায় চলতি বছরের একই সময়ে ব্রাজিলের অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে অন্তত ৫ শতাংশ। ২০২০ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়লেও তা করোনা মহামারির ক্ষতির তুলনায় একেবারেই অপর্যাপ্ত।

এবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করেছিল ব্রাজিলের অর্থ মন্ত্রণালয়। তাদের সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি, তা বলা বাহুল্য।

ব্রাজিলের ব্যাংকগুলো ২০২০ সালে দেশটির জিডিপি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, যা ওই অঞ্চলের অন্য দেশগুলোর তুলনায় বেশ কম। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ধারণা, এবছর লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের অর্থনীতি ৮ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

মহামারির শুরু থেকেই করোনাভাইরাসকে গুরুত্ব না দেয়া এবং লকডাউনের বিরোধিতা করে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো। তিনি বরাবরই করোনায় স্বাস্থ্যঝুঁকির চেয়ে দেশব্যাপী লকডাউন দেয়াকে অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হিসেবে মনে করেন।

বর্তমানে বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ করোনায় আক্রান্ত দেশ ব্রাজিল। সেখানে এপর্যন্ত প্রায় ৬৫ লাখ মানুষ করোনা পজিটিভ শনাক্ত হযেছেন, মারা গেছেন অন্তত ১ লাখ ৭৫ হাজার। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০২০)