স্টাফ রিপোর্টার : রোহিঙ্গাদের জীবনমানের উন্নয়নের লক্ষ্যে ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়টিকে আন্তরিক প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশে সরকার। এ বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা না দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের এই স্থানান্তর নিয়ে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থার উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।

প্রথম ধাপে আজ কক্সবাজারের উখিয়ার শরণার্থী শিবির থেকে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছায়। এই রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় সেখানে গিয়েছেন জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং অবশ্যই তাদের সে দেশে ফেরাতে হবে। অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের এই নাগরিকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ তার সর্বোচ্চটা করছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই পর্যায়ে এসে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একমাত্র বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ হওয়া উচিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে দায়িত্ব নিয়ে এবং কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত হওয়া। আর সেটাই হবে এই সমস্যার একমাত্র স্থায়ী সমাধান। একইসঙ্গে আমরা বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক চেষ্টাকে খাটো করা এবং ভুল ব্যাখ্যা না করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে নোয়াখালীর হাতিয়ার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার। সে অনুযায়ী সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধাপে ধাপে সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।

এ বিষয়টি তুলে ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কক্সবাজারে জনাকীর্ণ ক্যাম্পগুলোকে কিছুটা ফাঁকা করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ১০ লাখ রোহিঙ্গার অস্থায়ী আবাসনের মধ্যে বছর বছর কয়েক হাজার নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘হতাশায় নিমজ্জিত এই জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ অবস্থানের কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খারাপ হতে থাকায় নিজস্ব পরিকল্পনা নিতে এবং নিজস্ব অর্থায়নে ভাসানচরকে তৈরি করতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সে কারণে সরকার সেখানে ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করেছে।’

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০২০)