লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : কৃষক পরিবারের ছেলে রমজান শেখ এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় লোহাগড়া উপজেলার আমাদা আদর্শ কলেজ থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। রমজান এসএসসিতেও বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।  

তিনি জানান, শিক্ষকতা তার পছন্দ। উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে জাতি গঠনে তিনি ভূমিকা রাখতে চান। রমজানের বাবা রফিক শেখ জানান, রমজান পাড়া-প্রতিবেশি ও শিক্ষকদের সহযোগিতা পেয়ে লেখাপড়া করে ভালো ফলাফল করেছে। এ জন্য আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রতিবেশি রাজিয়া, মহসিনসহ অন্যরা জানান, বয়সের ভারে রমজানের বাবা কৃষি কাজ ঠিকমত করতে পারেন না। তাছাড়া তিনি চোখেও কম দেখেন। দারিদ্র সংসারে রমজানকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন তাদের। সহপাঠী তানিয়া, লিমা, আরিফুলসহ অন্যরা জানান, আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বাড়ি থেকে ১১ কিলোমিটার (আসা-যাওয়া) পথ হেঁটে কোচিং করছে রমজান। সেই লক্ষ্যে প্রতিদিন বাড়ি থেকে হেঁটে নড়াইল শহরে যান তিনি। ভোর থেকেই হাটা শুরু করেন। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার আমাদা গ্রাম থেকে হেটে এড়েন্দা বাসস্ট্যান্ডে যান রমজান। এড়েন্দা থেকে বাসে করে আরো ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যান কোচিং সেন্টারে। উদ্দেশ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করা। স্বপ্নপূরণ হওয়া। অর্ধেক টাকা দিয়ে নড়াইলের একটি কোচিংয়ে ভর্তি হয়েছে সে। আমাদা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ আল-ফয়সাল খান বলেন, রমজান খুবই মেধাবী ছাত্র। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় সহপাঠীদের প্রাইভেট পড়িয়ে লেখাপড়ার খরচসহ সংসারে সহযোগিতা করেছে। রমজান উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পেলে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারবে।
(আরএম/এএস/আগস্ট ২০, ২০১৪)